
প্রতিবেদক: গত সপ্তাহে বেসরকারি খাতের তিনটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) পদত্যাগ করেছেন। সাউথইস্ট ব্যাংকের এমডিকে আগে থেকেই ছুটিতে পাঠিয়েছিল ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ। অন্যদিকে, হঠাৎ করেই পদত্যাগ করেছেন মেঘনা ও কমার্স ব্যাংকের এমডি। জানা গেছে, পরিচালনা পর্ষদের সঙ্গে মতবিরোধের জেরেই মূলত এই দুই ব্যাংকের এমডিদের পদত্যাগ করতে হয়েছে। হঠাৎ এই পরিবর্তনে বাংলাদেশ ব্যাংকও অস্বস্তিতে পড়েছে।
গত বছরের ৫ আগস্ট বাংলাদেশ ব্যাংক কমার্স, মেঘনা ও সাউথইস্ট ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন করে দেয়। কমার্স ব্যাংক ছিল এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে, আর মেঘনা ব্যাংক ছিল সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর পরিবার ও তাঁদের ঘনিষ্ঠদের নিয়ন্ত্রণে। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করছেন বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘কয়েকজন এমডি কেন পদত্যাগ করেছেন, আমরা তা খতিয়ে দেখছি।’
বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, কোনো এমডি পদত্যাগ করলে তাকে কারণ জানাতে হয় এবং বাংলাদেশ ব্যাংক তা মূল্যায়ন করে সিদ্ধান্ত নেয়। এমনকি, পদত্যাগপত্র প্রত্যাহারের নজিরও রয়েছে। কমার্স ব্যাংকের এমডি মোহাম্মদ মোশারফ হোসেনের পদত্যাগের পেছনে ৪৮ কোটি টাকা সুদ মওকুফের সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে পরিচালনা পর্ষদের সঙ্গে দ্বন্দ্বই মূল কারণ বলে জানা গেছে। গত মঙ্গলবার এক বোর্ড মিটিংয়ে কয়েকজন সদস্যের অসৌজন্যমূলক আচরণের পরদিনই তিনি পদত্যাগ করেন। যদিও ব্যাংকের পক্ষ থেকে বলা হয়, তিনি লক্ষ্য পূরণে ব্যর্থ হওয়ায় ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে পদত্যাগ করেছেন।
সাউথইস্ট ব্যাংকের এমডি নুরুদ্দিন মো. ছাদেক হোসেনও পদত্যাগ করেছেন অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে। চলতি বছরের ৪ মে তাঁকে তিন মাসের ছুটিতে পাঠানো হয়েছিল। আর মেঘনা ব্যাংকের এমডি কাজী আহ্সান খলিল গত রবিবার পদত্যাগ করেন। তিনি মাত্র ১৫ মাস আগে, ২০২৪ সালের এপ্রিলে, তিন বছরের জন্য দায়িত্ব নিয়েছিলেন। কাজী আহ্সান খলিল অভিযোগ করেছেন, নতুন পরিচালনা পর্ষদ কোনো কারণ ছাড়াই তাকে ছুটিতে পাঠানোর উদ্যোগ নেয়, যা মেনে না নিয়ে তিনি নিজেই পদত্যাগ করেন। তার মতে, বাংলাদেশ ব্যাংক তদন্ত করলে আরও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সামনে আসবে।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের মার্চে বাংলাদেশ ব্যাংক মেঘনা ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দিয়ে নতুন শেয়ারধারী ও স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ দেয়, যাঁদের মধ্যে দুজন ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক কর্মকর্তা।