দুর্বল কোম্পানির আইপিওতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা

অনলাইন ডেক্স:  গত কয়েক বছরে বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীরা তেমন মুনাফা করতে পারেননি। শেয়ার দর পতন এবং সূচক প্রায় এক জায়গায় আটকে থাকার কারণে, পুঁজিবাজারে আস্থাহীনতা বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে গত দুই বছরে আইপিওর মাধ্যমে তালিকাভুক্ত হওয়া কোম্পানিগুলোর অধিকাংশের আর্থিক অবস্থা দুর্বল, যা বিনিয়োগকারীদের জন্য হতাশাজনক হয়েছে।

এর ফলস্বরূপ, বিনিয়োগকারীরা লাভ তো দূরের কথা, বরং তাদের মূলধন হারানোর সম্মুখীন হয়েছেন। এ পরিস্থিতিতে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, এবং শেয়ার কারসাজির অভিযোগও রয়েছে অনেক কোম্পানির বিরুদ্ধে।

২০২৪ সালে চারটি কোম্পানি আইপিওর মাধ্যমে তালিকাভুক্ত হয়েছে: বেস্ট হোল্ডিংস, এনআরবি ব্যাংক, এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজ এবং টেকনো ড্রাগস। এগুলোর মাধ্যমে পুঁজিবাজারে ৬৪৫ কোটি টাকা তোলা হলেও, ২০২৩ সালে মাত্র তিনটি কোম্পানি আইপিওর মাধ্যমে তালিকাভুক্ত হয়েছিল, যা দুই দশকের মধ্যে সর্বনিম্ন। ২০২৩ সালে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলি হলো মিডল্যান্ড ব্যাংক, ট্রাস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স এবং সিকদার ইন্স্যুরেন্স, সঙ্গে ক্যাপিটেক গ্রামীণ ব্যাংক গ্রোথ ফান্ড একটি মিউচুয়াল ফান্ডও আসে।

আইপিওর মাধ্যমে তালিকাভুক্ত হওয়া কোম্পানির শেয়ার দামে গত দুই বছরে ব্যাপক পতন ঘটেছে, যার ফলে বিনিয়োগকারীরা বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়েছেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শেয়ার কারসাজি এবং গুজবের কারণে পুঁজিবাজারে অস্থিরতা বেড়েছে, এবং এই পরিস্থিতি ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের জন্য বিপদজনক হয়ে দাঁড়িয়েছে।

২০২৪ সালে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর শেয়ার দামের পতন কিছুটা উল্লেখযোগ্য হয়েছে। যেমন, এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজের শেয়ার দর কমেছে ৩২.৩৩ শতাংশ, বেস্ট হোল্ডিংসের ৪৪.৫১ শতাংশ, এবং সিকদার ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার দর ২৮.৯৫ শতাংশ কমেছে। এরই মধ্যে মিডল্যান্ড ব্যাংকের শেয়ার দর বেড়েছে ৪৬.৪৭ শতাংশ। এই ধরণের পরিস্থিতিতে অনেক বিনিয়োগকারী আতঙ্কিত হয়ে লোকসানে শেয়ার বিক্রি করেছেন এবং পুঁজিবাজার ছেড়ে চলে গেছেন।

তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের শুরুতে পুঁজিবাজারে ১৭ লাখ ৫৬ হাজার ৪৪০ জন বিনিয়োগকারী ছিল, যা বছরের শেষে ১৬ লাখ ৬৪ হাজার ৭৯৭ জনে কমে গেছে। অর্থাৎ, পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের সংখ্যা কমেছে ৯১ হাজার ৬৪৩ জন।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এ অবস্থায় বিনিয়োগকারীদের জন্য পুঁজিবাজারে সচেতন থাকতে হবে এবং কোনো অস্থিতিশীল কোম্পানিতে বিনিয়োগ না করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।