দেশে ফিচার ফোনের উৎপাদন বেশি, স্মার্টফোন বাজারে চোরাচালানের প্রভাব

অনলাইন ডেক্স: স্মার্টফোনের যুগেও দেশে ফিচার ফোনের উৎপাদন বেশি। কম দাম ও সহজলভ্যতার পরও চোরাচালানের মাধ্যমে আসা হ্যান্ডসেটের কারণে স্মার্টফোনের বাজার কাঙ্ক্ষিতভাবে বাড়তে পারছে না।

বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) জানিয়েছে, ২০২৩ সালে দেশে উৎপাদিত মোট হ্যান্ডসেটের ৬৯ শতাংশই ছিল ফিচার ফোন।

২০২৪ সালে দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলো মোট ২ কোটি ৭২ লাখ হ্যান্ডসেট উৎপাদন করেছে। এর মধ্যে

  • ১ কোটি ৮৮ লাখ ছিল ফিচার ফোন (প্রায় ৬৯%)
  • ৮৪ লাখ ছিল স্মার্টফোন

সংশ্লিষ্টদের মতে, দেশে স্মার্টফোন উৎপাদন কমার প্রধান কারণ চোরাচালান। বিদেশ থেকে আসা প্রায় সব হ্যান্ডসেটই স্মার্টফোন, যা বড় পরিমাণে অবৈধভাবে বাজারে প্রবেশ করছে।

বাংলাদেশ মোবাইল ফোন ইন্ডাস্ট্রি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি রিজওয়ানুল হক বলেন, “দেশে হ্যান্ডসেটের চাহিদার প্রায় ৩৫ শতাংশ চোরাচালানের মাধ্যমে মেটানো হয়, যা স্থানীয় নির্মাতাদের জন্য বড় ক্ষতির কারণ।”

  • ২০১৭ সালে সরকার দেশীয় উৎপাদনকে উৎসাহিত করতে কর সুবিধা দেয়। তখন ওয়ালটন মাত্র ৪০ হাজার থ্রিজি স্মার্টফোন উৎপাদন করেছিল।
  • ২০১৮ সালে দেশীয় কারখানায় উৎপাদিত ২২ লাখ ৩০ হাজার হ্যান্ডসেটের ৫৩.৪% ছিল ফিচার ফোন।
  • ২০১৯ সালে হ্যান্ডসেট উৎপাদন ৭.২৭ গুণ বেড়ে ১ কোটি ৬ লাখে পৌঁছে। এর মধ্যে ৬২.৫% ছিল ফিচার ফোন।
  • ২০২০ সালে দেশে তৈরি ২ কোটি ৪ লাখ হ্যান্ডসেটের ৬৬.৫% ছিল ফিচার ফোন।
  • ২০২১ সালে হ্যান্ডসেট উৎপাদন ২ কোটি ৯৫ লাখে পৌঁছায়, যার ৬৮% ছিল ফিচার ফোন।
  • ২০২২ সালে উৎপাদিত ৩ কোটি ১৬ লাখ হ্যান্ডসেটের প্রায় ৬৮% ফিচার ফোন।
  • ২০২৩ সালেও এই প্রবণতা অব্যাহত ছিল। দেশে উৎপাদিত ২ কোটি ৩৩ লাখ হ্যান্ডসেটের ৭০% ছিল ফিচার ফোন।

বাংলাদেশে স্মার্টফোন ব্যবহার দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে কম

বিশ্বব্যাংকের “ডিজিটাল অগ্রগতি ও প্রবণতা ২০২৩” প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে স্মার্টফোন ব্যবহারকারীর হার মাত্র ৫১.৭৭%, যা দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে কম। এমনকি আফগানিস্তানেও স্মার্টফোন ব্যবহারকারীর হার ৫৫.৭৯%।

দেশীয় স্মার্টফোন উৎপাদনের প্রবৃদ্ধি চোরাচালানের হ্যান্ডসেটের কারণে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। স্মার্টফোনের বাজার শক্তিশালী করতে চোরাচালান নিয়ন্ত্রণ ও স্থানীয় উৎপাদকদের উৎসাহিত করার প্রয়োজনীয়তা বিশেষজ্ঞরা তুলে ধরছেন।