
প্রতিবেদক: রাজধানীতে শুরু হয়েছে পাঁচ দিনব্যাপী ‘মধু মেলা’। মৌচাষ উন্নয়ন ও জনসাধারণের মধ্যে মধুর উপকারিতা তুলে ধরতে প্রথমবারের মতো এই মেলার আয়োজন করেছে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক)।
রোববার সকালে বিসিকের প্রধান কার্যালয়ে মেলার উদ্বোধন করেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোখলেস উর রহমান। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন শিল্পসচিব মো. ওবায়দুর রহমান। সভাপতিত্ব করেন বিসিক চেয়ারম্যান মো. সাইফুল ইসলাম।
মেলায় দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মৌচাষিদের ৩০টি স্টল অংশ নিয়েছে। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত সবার জন্য মেলা উন্মুক্ত থাকবে। চলবে আগামী ৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত।
বিসিকের হিসাবে, দেশে প্রতিবছর প্রায় ৭ হাজার ৫৪৬ টন মধু উৎপাদিত হয়। সুন্দরবন, মধুপুর গড়, শেরপুর, টাঙ্গাইল, দিনাজপুরসহ বিভিন্ন অঞ্চলে প্রাকৃতিক ও বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে মধু উৎপাদিত হচ্ছে। প্রাচীনকাল থেকে খাদ্য ও ঔষধি উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হলেও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাণিজ্যিকভাবে মধু উৎপাদন ও বিক্রি বেড়েছে।
উদ্বোধন শেষে ‘বাংলাদেশের মৌচাষ উন্নয়নে বিসিকের কার্যক্রম ও ভবিষ্যৎ করণীয়’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথি সচিব মোখলেস উর রহমান বলেন, “গ্রামগঞ্জে নানা মেলা হয়, তবে মধু মেলার ধারণা একেবারেই নতুন।”
শিল্পসচিব ওবায়দুর রহমান বলেন, “চিনির বিকল্প হিসেবে প্রাকৃতিক মধু খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। ভেজাল মধু বিক্রেতাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিতে হবে।”
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মোহাম্মদ সাখাওয়াৎ হোসেন। তিনি বলেন, মৌ-বাক্স ব্যবহার, প্রশিক্ষণ ও সরকারি সহায়তার ফলে মধু এখন একটি সম্ভাবনাময় শিল্প। এটি পুষ্টি সরবরাহ, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি ও বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠান ন্যাচারোর প্রতিষ্ঠাতা মো. আল আমিন বলেন, “মধুর মান বজায় রাখা ও মৌয়ালদের জীবনমান উন্নত করতে যথাযথ পারিশ্রমিক নির্ধারণ জরুরি।”
মৌচাষি আফজাল হোসেন বলেন, “ফুড গ্রেড কনটেইনার ব্যবহার বাধ্যতামূলক করতে হবে এবং ভেজাল মধু বিক্রেতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। এছাড়া মৌচাষিদের জন্য কম সুদে ঋণের ব্যবস্থা জরুরি।”