
প্রতিবেদক: ২০২৫-২৬ অর্থবছর থেকে কোম্পানিগুলোর বিভিন্ন তহবিল যেমন প্রভিডেন্ট ফান্ড, গ্র্যাচুইটি ফান্ড এবং ওয়ার্কার্স প্রফিট পার্টিসিপেটরি ফান্ড (ডব্লিউপিপিএফ) থেকে উৎসে কাটা করকে চূড়ান্ত কর হিসেবে ধরা হবে। অর্থাৎ, এসব তহবিলের জন্য আলাদা বার্ষিক কর রিটার্ন জমা দেওয়া বা নিরীক্ষা করানোর প্রয়োজন হবে না।
সোমবার সরকার এ সংক্রান্ত নতুন অর্থ অধ্যাদেশ ঘোষণা করেছে, যা ব্যবসার পরিবেশ আরও সহজ করতে সহায়ক হবে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)-এর সদস্য বদিউল আলম বলেন, “এই পদক্ষেপ ব্যবসায়ীদের আর্থিক ও প্রশাসনিক ব্যয় কমাবে। আগে উৎসে কর কাটার পর কর রিটার্ন জমা দিয়ে বাকি কর দিতে হতো, এখন উৎসে করকেই চূড়ান্ত ধরা হবে, ফলে করের বোঝাও কিছুটা কমবে।
বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশ লিমিটেডের এমডি রূপালী চৌধুরী বলেন, “দুই বছর আগে এসব তহবিলের জন্য কর রিটার্ন দেওয়ার বাধ্যবাধকতা ছিল না। পরে তা বাধ্যতামূলক হওয়ার কারণে কোম্পানিগুলোর অতিরিক্ত ব্যয় বেড়ে গিয়েছিল। উৎসে করকেই চূড়ান্ত কর হিসেবে স্বীকার করা ব্যবসার জন্য স্বস্তির বিষয়।”
তবে কিছু বিশ্লেষক এবং শিল্প বিশেষজ্ঞ এ পরিবর্তনকে নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করছেন। চৌধুরী এমদাদ অ্যান্ড কোম্পানির এমডি এস কে জামি চৌধুরী বলেন, “নিরীক্ষার বাধ্যবাধকতা না থাকায় তহবিল ব্যবস্থাপনায় অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা এবং অপব্যবহারের ঝুঁকি বাড়তে পারে। কারণ তৃতীয় পক্ষের যাচাই কমে যাবে।
বর্তমানে কোম্পানি ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠান প্রভিডেন্ট ফান্ড, গ্র্যাচুইটি ফান্ড এবং ডব্লিউপিপিএফ পরিচালনা করে থাকে। এসব তহবিল সাধারণত সঞ্চয়পত্র, ব্যাংকের স্থায়ী আমানত (এফডিআর) ও ট্রেজারি বন্ডে বিনিয়োগ করা হয়।
তহবিল থেকে আয়ে ১৫ শতাংশ কর ধার্য করা হলেও, উৎসে কর কাটা হয় ৫ থেকে ১০ শতাংশ হারে। বাকি কর অর্থবছর শেষে কর রিটার্নের মাধ্যমে পরিশোধ করতে হয় এবং আলাদা নিরীক্ষাও বাধ্যতামূলক।
দেশে প্রায় ২৫ হাজার কোম্পানি বার্ষিক কর রিটার্ন জমা দেয়। যদিও প্রায় সব কোম্পানির প্রভিডেন্ট ফান্ড থাকলেও, গ্র্যাচুইটি ও ডব্লিউপিপিএফ রয়েছে মাত্র ১০ শতাংশের নিচে প্রতিষ্ঠানেই।
নতুন নিয়মে উৎসে করকেই চূড়ান্ত ধরা হবে, যা কর পরিশোধ প্রক্রিয়া সহজ করবে এবং কোম্পানির প্রশাসনিক ব্যয় কমাবে। তবে, নিরীক্ষা শিথিল হওয়ার ফলে তহবিল ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতার অভাব ও অনিয়মের আশঙ্কা রয়েছে।