
প্রতিবেদক: দেশে কয়েক মাস ধরে ভোজ্যতেলের বাজার মোটামুটি স্থিতিশীল থাকলেও সাম্প্রতিক সময়ে তা আবার অস্থির হয়ে উঠেছে। মূলত ইন্দোনেশিয়ায় পাম অয়েল নির্ভর বায়োফুয়েল নীতি ঘোষণার পর আন্তর্জাতিক বাজারে পাম অয়েলের দাম বেড়ে যাওয়ায় এর প্রভাব পড়েছে দেশের বাজারেও। সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছে পাম অয়েল ও সয়াবিন তেলের দামে।
চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জ দেশের বৃহত্তম পাইকারি ভোজ্যতেল বাজার হিসেবে পরিচিত। এখানকার ব্যবসায়ীদের তথ্যমতে, গত এক মাসে পাম অয়েলের দাম প্রতি মণে ৭০ থেকে ৭৫ টাকা এবং সয়াবিন তেলের দাম প্রতি মণে ১০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।
আন্তর্জাতিক বাজারে এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত পাম অয়েলের দাম কিছুটা নিম্নমুখী থাকলেও জুলাইয়ে তা আবার ঊর্ধ্বমুখী হয়ে দাঁড়ায় প্রতি টনে ১,০২০ থেকে ১,০২৫ ডলারে। অপরদিকে, সয়াবিন তেলের দামও কিছুটা নিম্নগামী হয়ে জুলাইয়ের শেষে এসে দাঁড়ায় টনপ্রতি ১,০০০ ডলারে।
বিশ্বের বৃহত্তম পাম অয়েল উৎপাদনকারী দেশ ইন্দোনেশিয়া বায়োফুয়েল উৎপাদন ৩৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৪০ শতাংশে উন্নীত করেছে এবং ২০২৫ সালের মধ্যে তা ৫০ শতাংশে উন্নীত করার পরিকল্পনা করছে। এতে পাম অয়েলের শিল্প ব্যবহারে চাহিদা বাড়ায় খাদ্য পণ্য হিসেবে এর সরবরাহ কমে যাচ্ছে, ফলে দাম বাড়ছে।
খাতুনগঞ্জে সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, বর্তমানে মণপ্রতি পাম অয়েলের দাম ৫,৭৭০ থেকে ৫,৭৭৫ টাকা, যা এক মাস আগে ছিল প্রায় ৫,৭০০ টাকা। সুপার পাম অয়েলের দাম বেড়ে হয়েছে ৫,৯০০ টাকা। সয়াবিন তেলও বেড়ে মণপ্রতি ৬,৫০০ টাকায় লেনদেন হচ্ছে, যা খুচরা বাজারে লিটারপ্রতি ৪ থেকে ৫ টাকা পর্যন্ত বাড়তি দাম সৃষ্টি করেছে।
বাংলাদেশ পাইকারি ভোজ্যতেল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি গোলাম মওলা জানান, দেশে পর্যাপ্ত ভোজ্যতেল মজুদ রয়েছে। ব্যাংকিং জটিলতা কিছুটা কমে আসায় আমদানি স্বাভাবিক হয়েছে। তবে আন্তর্জাতিক বাজারে পাম অয়েলের মূল্যবৃদ্ধির ফলে স্থানীয় বাজারে কিছুটা প্রভাব পড়ছে।