পায়রা বন্দরে যন্ত্র কিনতে ব্যয় ১৬২ কোটি, এলএনজি আমদানিতে ৯৮৯ কোটি: অর্থ উপদেষ্টা

প্রতিবেদক: পায়রা সমুদ্রবন্দরের কনটেইনার ওঠানো-নামানোর যন্ত্র কেনা ও স্থাপনসহ আনুষঙ্গিক কাজে ব্যয় ধরা হয়েছে ১৬২ কোটি টাকা। ‘পায়রা সমুদ্রবন্দরের প্রথম টার্মিনাল এবং আনুষঙ্গিক সুবিধাদি নির্মাণ (দ্বিতীয় সংশোধিত)’ প্রকল্পের আওতায় এ ব্যয় অনুমোদন করেছে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি।

মঙ্গলবার সচিবালয়ে কমিটির বৈঠক শেষে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে যন্ত্র কেনার জন্য চারটি প্রতিষ্ঠান প্রস্তাব দেয়। এর মধ্যে কারিগরি যোগ্যতা পূরণ করে তিনটি। সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে কাজ পেয়েছে চীনের দুটি প্রতিষ্ঠান—এইচপি ও এনজে চায়না।

২০১৯ সালের জানুয়ারিতে পায়রা বন্দরের প্রথম টার্মিনাল নির্মাণ কাজ শুরু হয়। প্রকল্পটি শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২১ সালের ডিসেম্বরে। তবে অগ্রগতির ভিত্তিতে এখন টার্মিনাল, সংযোগ সড়ক ও আন্ধারমানিক নদীর ওপর সেতু নির্মাণ শেষে ২০২৬ সালের ১ জুলাই বন্দরের পূর্ণাঙ্গ কার্যক্রম শুরু হবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

পটুয়াখালীর কলাপাড়ার লালুয়া ইউনিয়নের চাড়িপাড়ায় অবস্থিত বন্দরের উন্নয়নে চায়নার তিনটি প্রতিষ্ঠান কাজ করছে। এ পর্যন্ত প্রকল্পে ব্যয় হয়েছে ৭ হাজার ৩৮১ কোটি ৭৬ লাখ টাকা।

মঙ্গলবারের বৈঠকে সিঙ্গাপুর ও দক্ষিণ কোরিয়া থেকে দুটি এলএনজি কার্গো আমদানির দুটি প্রস্তাব অনুমোদন পায়। মোট ব্যয় হবে ৯৮৯ কোটি ৩৭ লাখ টাকা।

গানভোর সিঙ্গাপুর প্রাইভেট লিমিটেড থেকে প্রতি এমএমবিটিইউ ১১.৯৭ ডলারে একটি কার্গো আমদানিতে খরচ হবে ৫০২ কোটি ৯৫ লাখ টাকা।

পোসকো ইন্টারন্যাশনাল (দক্ষিণ কোরিয়া) থেকে একই দরে আরেকটি কার্গোর জন্য খরচ হবে ৪৮৬ কোটি ৪২ লাখ টাকা।

প্রতিটি কার্গোতে এলএনজি থাকবে ৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ।

বৈঠকে ‘নারায়ণগঞ্জের খানপুরে অভ্যন্তরীণ কনটেইনার ও বাল্ক টার্মিনাল নির্মাণ (প্রথম সংশোধিত)’ প্রকল্পের আওতায় একটি প্যাকেজে ২৮৮ কোটি ৯ লাখ টাকার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। কাজটি যৌথভাবে পেয়েছে স্পেকট্রা ইঞ্জিনিয়ার্স ও এস এস রহমান ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড।

অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বৈঠক শেষে জানান, এখন থেকে কোনো সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানকে আর প্রতীকী মূল্যে সরকারি জমি দেওয়া হবে না। জমি নিতে হলে তার যথাযথ মূল্য পরিশোধ করতে হবে।

বৈঠকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর জন্য চট্টগ্রামের জলিল টেক্সটাইল মিলসের ৫৪.৯৯ একর জমি হস্তান্তরের একটি প্রস্তাব উপস্থাপন করা হয়। অর্থ উপদেষ্টা জানান, সেনাবাহিনীকে জমি দেওয়া হবে ঠিকই, তবে তা নির্ধারিত দামে—প্রতীকী মূল্যে নয়।

তিনি বলেন, প্রতীকী মূল্যে জমি দেওয়া হলে অনেক সময় যথাযথ ব্যবহার হয় না। ১০ একর প্রয়োজন থাকলেও ১০০ একরের দাবি করা হয়।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, জলিল টেক্সটাইল মিলসের জমি সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তরের বিষয়ে নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।