পেনশনার সঞ্চয়পত্র: অবসরপ্রাপ্তদের জন্য সর্বোচ্চ মুনাফার সঞ্চয় পরিকল্পনা

প্রতিবেদক: অবসরপ্রাপ্ত সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত এবং আধা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য সবচেয়ে লাভজনক সঞ্চয়পত্র হলো পেনশনার সঞ্চয়পত্র। পাঁচ বছর মেয়াদি এই সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করলে মেয়াদ শেষে সর্বোচ্চ ১১ দশমিক ৯৮ শতাংশ হারে মুনাফা পাওয়া যায়। বর্তমানে সরকারের চারটি চালু সঞ্চয়পত্রের মধ্যে এটিতেই সবচেয়ে বেশি মুনাফা দেওয়া হয়। জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তর ২০০৪ সালে এই সঞ্চয়পত্র চালু করে।

পেনশনার সঞ্চয়পত্র পাঁচটি নির্দিষ্ট মূল্যমানে পাওয়া যায়—৫০ হাজার, ১ লাখ, ২ লাখ, ৫ লাখ ও ১০ লাখ টাকা। এটি জাতীয় সঞ্চয় ব্যুরো ছাড়াও বাংলাদেশ ব্যাংকের শাখাসমূহ, অনুমোদিত বাণিজ্যিক ব্যাংক এবং ডাকঘর থেকে কেনা ও নগদায়ন করা যায়। এর মেয়াদ পাঁচ বছর এবং প্রতি মাসে মুনাফা প্রদান করা হয়। সঞ্চয়পত্রের মালিক চাইলে নমিনি নিয়োগ করতে পারেন এবং মৃত্যুর পর নমিনি মেয়াদ শেষে বা সঙ্গে সঙ্গে তা নগদায়ন করতে পারেন।

সরকার ১ জুলাই থেকে সব ধরনের সঞ্চয়পত্রে মুনাফার হার কিছুটা কমিয়েছে। সাড়ে সাত লাখ টাকার কম বিনিয়োগের ক্ষেত্রে পঞ্চম বছর শেষে আগে মুনাফার হার ছিল ১২ দশমিক ৫৫ শতাংশ, যা কমিয়ে ১১ দশমিক ৯৮ শতাংশ করা হয়েছে। সাড়ে সাত লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগে আগের মুনাফা ছিল ১২ দশমিক ৩৭ শতাংশ, এখন তা কমে দাঁড়িয়েছে ১১ দশমিক ৮০ শতাংশে। তবে মেয়াদ পূর্তির আগে নগদায়ন করলে কম হারে মুনাফা প্রাপ্য হবে এবং যদি অতিরিক্ত অর্থ প্রদান করা হয়ে থাকে, তাহলে তা মূল টাকা থেকে কেটে সমন্বয় করা হবে।

উৎসে করের ক্ষেত্রে সুবিধা রয়েছে। পেনশনার সঞ্চয়পত্রে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগের ক্ষেত্রে মুনাফার ওপর কোনো উৎসে কর কাটা হয় না। তবে ৫ লাখ টাকার বেশি হলে ১০ শতাংশ হারে কর কাটা হয়। এই সঞ্চয়পত্র কিনতে পারেন অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী, সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি, সশস্ত্র বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সদস্য এবং মৃত চাকরিজীবীর পেনশনভোগী স্ত্রী, স্বামী বা সন্তান। সব মিলিয়ে এটি অবসরপ্রাপ্তদের জন্য একটি নিরাপদ ও লাভজনক বিনিয়োগের মাধ্যম।