
অনলাইন ডেক্স: দেশের প্রধান রপ্তানি খাত হিসেবে পোশাক শিল্পের জন্য একটি স্বতন্ত্র মন্ত্রণালয় গঠনের দাবি জানিয়েছেন উদ্যোক্তারা। তাঁরা মনে করেন, বৈশ্বিক ও স্থানীয় নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় দীর্ঘমেয়াদি নীতি সহায়তা দরকার, যা আলাদা মন্ত্রণালয় ছাড়া সম্ভব নয়।
গতকাল শনিবার (৮ মার্চ) রাজধানীর কুর্মিটোলা গলফ ক্লাবে বিজিএমইএ নির্বাচনী জোট-ফোরামের আয়োজিত সাধারণ ব্যবসায়ীদের নিয়ে এক আলোচনা সভা ও ইফতার অনুষ্ঠানে পোশাক শিল্প মালিকরা এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, পোশাক খাতের নেতৃত্বে যারা আসবেন, তাদের কেবল কার্ড বহনকারী পরিচালক হিসেবে নয়, বরং শিল্পের স্বার্থে কার্যকর সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী হিসেবে ভূমিকা রাখতে হবে।
ফোরাম প্যানেলের লিডার মাহমুদ হাসান খান বাবু বলেন—পোশাক খাত নিয়ে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র সব সময় চলতে থাকে। শ্রমিক অসন্তোষের নামে মাঝে মাঝে নৈরাজ্য সৃষ্টি হয়। এর পেছনে রাজনৈতিক কারণ রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা দরকার। কারণ প্রকৃত শ্রমিকরা কখনোই নিজের রুটিরুজি নষ্ট করতে পারে না।
তিনি আরও বলেন—পোশাক শিল্পকে দীর্ঘমেয়াদে টিকিয়ে রাখতে হলে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত নীতি সহায়তা দেওয়া প্রয়োজন। পাশাপাশি, কাস্টমসের নিরীক্ষা হয়রানি থেকে উদ্যোক্তাদের রক্ষা করতে হবে। আর এ জন্য আলাদা মন্ত্রণালয় গঠন অত্যন্ত জরুরি।
বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি আনিসুর রহমান সিনহা মনে করেন, শিল্পের সংকট নিরসনে সরকারকে বোঝানোর দায়িত্ব উদ্যোক্তাদেরই নিতে হবে।
সরকার ব্যবসা বোঝে না। তাই আমাদের দায়িত্ব সরকারের কাছে সঠিকভাবে বিষয়গুলো উপস্থাপন করা। আন্তর্জাতিক ব্যবসার ক্ষেত্রে নানা প্রতিবন্ধকতা তৈরি হচ্ছে, কিন্তু বিজিএমইএ সেগুলো যথাযথভাবে তুলে ধরতে পারছে না। এতে উদ্যোক্তারা হতাশ হয়ে পড়ছেন। এই সংকট সবার জন্যই ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সাবেক সভাপতি আনোয়ার-উল-আলম চৌধুরী (পারভেজ) বলেন—বর্তমান সংকট মোকাবিলায় বিজিএমইএর দক্ষ নেতৃত্ব প্রয়োজন। সঠিক নেতৃত্ব ছাড়া শিল্পের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত।
বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি ড. রুবানা হক বলেন—বহু বছরের নানা সমস্যার জঞ্জাল থেকে মুক্তি চান মালিকরা। বিজিএমইএ দীর্ঘদিন ধরে নিয়ন্ত্রণের মধ্যে ছিল, এবার একটি স্বচ্ছ নির্বাচন প্রয়োজন সংগঠনটির ভাবমূর্তি ফেরাতে।
তিনি আরও বলেন—কোনো কারখানা রুগ্ন হয়ে গেলে মালিকদের জন্য কোনো ‘এক্সিট পলিসি’ (ব্যবসা গুটিয়ে বের হয়ে আসার উপায়) নেই। এ বিষয়ে একটি বিস্তারিত নীতিমালা তৈরি করতে হবে। পাশাপাশি, বিদেশি ক্রেতাদের সঙ্গে ন্যায্য দর নিয়ে আরও কার্যকরভাবে দর কষাকষি করতে হবে।