প্রথমবারের মতো ছোট আকারের বাজেট, গুরুত্ব ‘মানুষকেন্দ্রিক উন্নয়নে

প্রতিবেদক: ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে শূন্য দারিদ্র্য, শূন্য বেকারত্ব এবং শূন্য কার্বন নির্গমন। অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা পুনঃপ্রতিষ্ঠার পাশাপাশি এই বাজেটে অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই সমাজ গঠনের দিকনির্দেশনা তুলে ধরা হয়েছে। বাজেট বক্তৃতায় অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, “অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে এনে একটি উন্নত সমাজ বিনির্মাণের উদ্দেশ্যে আমরা যেসব কার্যক্রম গ্রহণ করেছি, তার মূল লক্ষ্য হচ্ছে শূন্য দারিদ্র্য, শূন্য বেকারত্ব ও শূন্য কার্বনভিত্তিক সমাজ গঠন। এর মাধ্যমে মানুষের জীবনমানের আমূল পরিবর্তন ঘটবে এবং বৈষম্যের দুষ্টচক্র থেকে মুক্তি মিলবে।”

এই দর্শনটি মূলত নোবেলজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের “তিন শূন্য” তত্ত্ব থেকে অনুপ্রাণিত। তিনি টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যকে সামনে রেখে শূন্য দারিদ্র্য, শূন্য বেকারত্ব ও শূন্য কার্বন নির্গমনের ধারণা তুলে ধরেন, যা বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত। এই তত্ত্বের ভিত্তিতেই প্রস্তাবিত বাজেটকে একটি রূপান্তরমুখী পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

অর্থ উপদেষ্টা আরও বলেন, “যে স্বপ্নকে ধারণ করে জুলাইয়ের গণ-অভ্যুত্থানের ভিত রচিত হয়েছিল, সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করে আমরা আগামী প্রজন্মের জন্য একটি সুন্দর ও বাসযোগ্য আবাসস্থল রেখে যেতে চাই।” এ লক্ষ্যে বাজেট প্রণয়নে প্রথাগত ভৌত অবকাঠামোর পরিবর্তে এবার গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে মানুষের জীবনমান, কর্মসংস্থান, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সুশাসন ও নাগরিক সুবিধায়। বাজেট বক্তৃতায় তিনি উল্লেখ করেন, দেশের ইতিহাসে এবারই প্রথম বিগত অর্থবছরের চেয়ে ছোট আকারের বাজেট প্রস্তাব করা হয়েছে, যা প্রবৃদ্ধি-নির্ভর ধারণা থেকে বেরিয়ে সামগ্রিক উন্নয়ন চিন্তার প্রতিফলন।

মানবিক উন্নয়ন ও পরিবেশগত ভারসাম্যকে গুরুত্ব দিয়ে এই বাজেট টেকসই উন্নয়ন কাঠামো গড়ার ওপর জোর দিয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তন, চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের সম্ভাবনা ও স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উত্তরণের প্রেক্ষাপটকে মাথায় রেখে এই বাজেট প্রণয়ন করা হয়েছে। অর্থ উপদেষ্টার মতে, এই বাজেট অন্তর্ভুক্তিমূলক ও ন্যায্য সমাজ গঠনের ভিত্তি স্থাপন করবে এবং দেশের আর্থ-সামাজিক কাঠামোয় দীর্ঘস্থায়ী ইতিবাচক পরিবর্তন নিয়ে আসবে।