
প্রতিবেদক: যুক্তরাজ্য ও ইউরোপে বসবাসরত বাংলাদেশিদের জন্য দেশে টাকা পাঠানোর প্রক্রিয়াকে আরও সহজ, দ্রুত ও নিরাপদ করতে কাজ করছে ফিনটেক প্রতিষ্ঠান ‘প্রফি’ (Profee)। প্রতিযোগিতামূলক বিনিময় হার, প্রথম লেনদেনে কোনো ফি না থাকা এবং মাত্র কয়েক মিনিটেই টাকা পৌঁছে দেওয়ার সুবিধার কারণে এটি প্রবাসীদের মধ্যে দ্রুত জনপ্রিয়তা পাচ্ছে।
বাংলাদেশের অর্থনীতিতে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স সব সময়ই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে আসছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে প্রবাসীরা দেশে রেকর্ড ২ হাজার ৯৫০ কোটি ডলার পাঠিয়েছেন। এর মধ্যে শুধু মার্চ মাসেই এসেছে ৩২৯ কোটি ডলার, যা দেশের ইতিহাসে এক মাসে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স আহরণ। সরকারের দেওয়া প্রণোদনা, হুন্ডির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা এবং মোবাইল ব্যাংকিংয়ের প্রসারের কারণে এখন অর্থ প্রেরণ আগের চেয়ে অনেক সহজ, নিরাপদ এবং দ্রুততর হয়েছে। এই অর্থ দেশের লাখো পরিবারের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও দৈনন্দিন ব্যয় মেটানোর পাশাপাশি জাতীয় রিজার্ভকেও শক্তিশালী করছে।
এই প্রেক্ষাপটে প্রফি বাংলাদেশি প্রবাসীদের চাহিদা বিবেচনায় রেখে তাদের সেবা তৈরি করেছে। প্রতিষ্ঠানটির উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্যের মধ্যে রয়েছে— প্রথম লেনদেনে কোনো সার্ভিস চার্জ না রাখা, বাজারের অন্যতম সেরা বিনিময় হার প্রদান, এবং মাত্র কয়েক মিনিটে অধিকাংশ লেনদেন সম্পন্ন করার সুবিধা। যেখানে প্রচলিত ব্যাংক ওয়্যার ট্রান্সফারে ১ থেকে ৩ দিন সময় লাগে, সেখানে প্রফির ৯০ শতাংশ লেনদেনই সম্পন্ন হয় কয়েক মিনিটে।
প্রফির মাধ্যমে টাকা পাঠানো যায় ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ড, অ্যাপল পে কিংবা গুগল পে-এর মতো সহজ ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহার করে। গ্রাহকের আর্থিক ও ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষায় প্রতিষ্ঠানটি পিসিআই-ডিএসএস সনদপ্রাপ্ত এবং টায়ার-৪ ডেটা সেন্টার ব্যবহার করে। টাকা গ্রহণের জন্য প্রাপককে কোনো নিবন্ধন বা অ্যাকাউন্ট খোলার প্রয়োজন হয় না; অর্থ সরাসরি তাঁদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা হয়ে যায়।
প্রফির ব্র্যান্ড অ্যান্ড মার্কেটিং কমিউনিকেশনস বিভাগের প্রধান দিমিত্রি গোরখ বলেন, “রেমিট্যান্স মানে শুধু টাকা পাঠানো নয়, এটি প্রিয়জনের প্রতি যত্ন, ত্যাগ ও সমর্থনের বহিঃপ্রকাশ। আমরা এমন একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করেছি, যা আধুনিক বাংলাদেশি প্রবাসীদের চাহিদা পূরণ করে—দ্রুত, নিরাপদ এবং সহজ ব্যবহারের সুবিধাসহ।”
প্রফি বর্তমানে বিশ্বের ৯০টিরও বেশি দেশে সেবা দিচ্ছে এবং এর গ্রাহকসংখ্যা ৮ লাখ ছাড়িয়ে গেছে। প্রতি সপ্তাহে যুক্ত হচ্ছেন প্রায় ১০ হাজার নতুন ব্যবহারকারী। প্রতিষ্ঠানটি সম্প্রতি ‘অ্যাকুইজিশন ইন্টারন্যাশনাল’-এর স্বীকৃতি অনুযায়ী ২০২৪ সালের ‘সেরা আন্তর্জাতিক মানি ট্রান্সফার সলিউশন’ পুরস্কার অর্জন করেছে।
প্রফির মাধ্যমে টাকা পাঠানোর পদ্ধতিও বেশ সহজ। ব্যবহারকারীকে প্রথমে ওয়েবসাইট বা মোবাইল অ্যাপে গিয়ে ফোন নম্বর ও ই–মেইল দিয়ে নিবন্ধন করতে হয়। এরপর প্রেরণের দেশ ও পরিমাণ নির্বাচন করলে অ্যাপটিই স্বয়ংক্রিয়ভাবে টাকায় রূপান্তরিত অঙ্ক দেখায়। এরপর প্রাপকের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বা মোবাইল ওয়ালেটের (যেমন বিকাশ, নগদ, রকেট) তথ্য দিয়ে ডেবিট/ক্রেডিট কার্ড বা ডিজিটাল পেমেন্টের মাধ্যমে টাকা পাঠানো যায়। সব তথ্য নিশ্চিত করার পর ‘কনফার্ম’ বাটনে ক্লিক করলেই কয়েক মিনিটের মধ্যে টাকা পৌঁছে যায় প্রাপকের কাছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, প্রফির মতো আধুনিক ও গ্রাহকবান্ধব ডিজিটাল সেবাগুলো দেশের রেমিট্যান্সপ্রবাহকে আরও গতিশীল করবে এবং প্রবাসীদের কষ্টার্জিত অর্থ দ্রুত ও নিরাপদভাবে প্রিয়জনদের কাছে পৌঁছাতে সাহায্য করবে।