
অনলাইন ডেক্স: প্রিপেইড মিটার বসাতে আবেদন করেও এখনো যারা সংযোগ স্থাপন করেননি, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (কেজিডিসিএল)। সংস্থাটি জানিয়েছে, আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই এমন গ্রাহকদের গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হবে।
আবাসিক গ্রাহকদের জন্য প্রিপেইড মিটার স্থাপনের প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। তবে প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, আরও এক দফা সময় বাড়ানোর সুযোগ নেই। ফলে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে কেজিডিসিএল।
কেজিডিসিএলের উপ-মহাব্যবস্থাপক ও প্রকল্প পরিচালক মো. নাহিদ আলম বলেন,
“সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সবাইকে প্রিপেইড মিটার নিতে হবে। আমাদের নীতিমালায়ও মিটারের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। যারা এখনো মিটার বসাননি, তাদের বিরুদ্ধে দুই-এক মাসের মধ্যে হার্ডলাইনে যাবো। সোজা কথা— যারা মিটার বসাবে না, তাদের লাইন কেটে দেওয়া হবে।”
এ পর্যন্ত ১ লাখ ৩০ হাজার গ্রাহক আবেদন করলেও, মাত্র ৬৩ হাজার প্রিপেইড মিটার সংযোগ স্থাপন করেছেন। বাকিরা বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে মিটার বসানোর প্রক্রিয়ায় এগোচ্ছেন না।
গ্রাহককে নিজস্ব খরচে রান্নাঘর পর্যন্ত পৃথক লাইন টানতে হবে।এতে প্রতি চুলার পেছনে ৪,০০০ থেকে ১২,০০০ টাকা পর্যন্ত খরচ হতে পারে।অনেক ভবনে প্রত্যেক ফ্ল্যাটের জন্য আলাদা লাইন বসাতে হবে, যা ব্যয়বহুল।
গ্যাসের অতিরিক্ত ব্যবহারের শঙ্কা বর্তমানে সরকার নির্ধারিত ৬০ ঘনমিটার গ্যাসের জন্য মাসিক বিল ১,০৮০ টাকা।অনেক গ্রাহক অনুমোদিত সীমার চেয়ে বেশি গ্যাস ব্যবহার করেন।প্রিপেইড মিটার বসালে ব্যবহারের পরিমাণ স্বচ্ছভাবে দেখা যাবে, ফলে বিল বাড়ার আশঙ্কায় অনেকেই মিটার নিতে চান না।ভাড়াটিয়াদের ওপর অতিরিক্ত খরচের চাপ,বাড়িওয়ালারা মনে করছেন, মিটার ভাড়া দিতে হবে, কিন্তু গ্যাস বিল দিচ্ছেন ভাড়াটিয়ারা।ফলে বাড়িওয়ালাদের জন্য মিটার স্থাপনের বাড়তি খরচ অপ্রয়োজনীয় মনে হচ্ছে।
কেজিডিসিএল মনে করছে, উচ্চ স্থাপনা খরচ ছাড়াও গ্যাস চুরি প্রতিরোধের কারণেও অনেকে প্রিপেইড মিটার বসাতে চান না। সংস্থার একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন,
“অনেক গ্রাহক অনুমোদিত সীমার চেয়ে বেশি গ্যাস ব্যবহার করেন। প্রিপেইড মিটার বসালে তারা নির্দিষ্ট সীমার বেশি গ্যাস ব্যবহার করলে বাড়তি বিল দিতে হবে। এজন্য অনেকেই মিটার বসাতে চান না।”
প্রকল্পটি ২০২১ সালের ১৮ মে অনুমোদিত হয় এবং ২০২৩ সালের জুনে কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। পরে মেয়াদ বাড়িয়ে ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়েছে।
কেজিডিসিএল জানিয়েছে,,পর্যায়ক্রমে সব আবাসিক গ্রাহককে প্রিপেইড মিটারের আওতায় আনা হবে।যারা এখনো মিটার বসাননি, তাদের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হবে।গ্যাসের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করতে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সকল আবাসিক গ্রাহকের প্রিপেইড মিটার গ্রহণ বাধ্যতামূলক। কিন্তু উচ্চ খরচ ও বাড়তি বিলের আশঙ্কায় গ্রাহকদের মধ্যে অনীহা দেখা দিয়েছে। তবে গ্যাস ব্যবহারে স্বচ্ছতা আনতে ও অপচয় রোধে কেজিডিসিএল কঠোর অবস্থানে রয়েছে। আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই অনাগ্রহী গ্রাহকদের বিরুদ্ধে সংযোগ বিচ্ছিন্নসহ কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে