ফুলের বাজারে বড় ধাক্কা, যশোরের কৃষকরা ক্ষতির মুখে

অনলাইন ডেক্স: যশোরের ফুল বিক্রিতে এবার লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা যায়নি, প্রধানত পাঁচটি কারণে। স্থানীয় কৃষক এবং ব্যবসায়ীরা আশা করেছিলেন, এ মৌসুমে প্রায় ১শ কোটি টাকার ফুল বিক্রি হবে, তবে এখন পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে মাত্র ২০ কোটি টাকার ফুল। সামনে যেসব দিবস রয়েছে, তাতেও কিছু ফুল বিক্রি হবে, কিন্তু চাষি সমিতির নেতারা মনে করেন, প্রাথমিক লক্ষ্যমাত্রার কাছেও পৌঁছানো সম্ভব হবে না।

এদিকে, ফুল চাষিরা আশার কথা জানিয়েছেন—তাদের মতে, কৃষকরা লাভের মুখ দেখেননি, তবে লোকসানও হয়নি।

গদখালী ফুল ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবু জাফর বলেন, এবার বাজারে ফুলের ব্যাপক সরবরাহ ছিল এবং বিক্রিও হয়েছে বেশি, কিন্তু দাম তুলনামূলকভাবে কম ছিল, যার ফলে ১শ কোটি টাকার ফুল বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি।

এমনকি, অতিবৃষ্টির কারণে কৃষকরা সব ফুল একসঙ্গে চাষ করেছেন, ফলে গরমের কারণে ফুলও একসাথে ফুটেছে। এর ফলে বাজারে ফুলের সরবরাহ ছিল অতিরিক্ত এবং দাম কমে গেছে। গ্লাডিওলাস এবং গোলাপের সরবরাহ ছিল অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি, তবে দাম কম ছিল।

বাংলাদেশ ফ্লাওয়ার সোসাইটির সভাপতি আব্দুর রহিম আরো তিনটি কারণে ফুলের বাজারের ভালো ব্যবসা না হওয়ার কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, বিশ্ব ইজতেমার কারণে অনেক বিক্রেতা গদখালীতে ফুল সংগ্রহ করতে আসেননি। এছাড়া, পবিত্র শবে বরাতের সাথে পহেলা ফাল্গুন এবং ভালোবাসা দিবসের একত্রে পড়ে যাওয়াও সমস্যার সৃষ্টি করেছে।

রাজনৈতিক অস্থিরতাও ফুলের বাজারে ধসের অন্যতম কারণ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। ১৩ ও ১৪ ফেব্রুয়ারি গদখালী-পানিসারায় পর্যটকদের উপস্থিতি যেমন ছিল, তেমন বিক্রি কম ছিল। এই সময় ফুল মোড়ের রাইডগুলো বন্ধ রাখার কারণে বিক্রির পরিমাণ কমে গেছে।

তবে, গ্লাডিওলাস এবং জারবেরার দাম কম হলেও রজনীগন্ধা ও গোলাপের ফলনে লোকসান কাটিয়ে উঠা সম্ভব হবে বলে কৃষকরা মনে করেন। সামগ্রিকভাবে ফুল চাষে কোনো বড় ধরনের লোকসান হয়নি এবং আগামীতে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ও স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ফুল বিক্রি বাড়বে, তবে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা সম্ভব হবে না, এমনটাই মনে করছেন ব্যবসায়ী নেতারা।