
প্রতিবেদক: দেশের অন্যতম বেসরকারি বিমান সংস্থা নভোএয়ার সাময়িকভাবে তাদের সব ধরনের ফ্লাইট অপারেশন বন্ধ ঘোষণা করেছে। শুক্রবার, ২ মে থেকে সংস্থাটির অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট চলাচল বন্ধ রয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে সংশ্লিষ্ট সূত্র।
জানা গেছে, নভোএয়ার বর্তমানে তাদের বহরে থাকা পাঁচটি এটিআর (ATR) উড়োজাহাজ বিক্রির প্রক্রিয়া শুরু করেছে। ইতোমধ্যেই বিমানের ইন্সপেকশন কার্যক্রম শুরু হয়েছে, যা মে মাসের মধ্যেই শেষ হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
নভোএয়ার বর্তমানে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, সিলেট, যশোর, সৈয়দপুর ও রাজশাহীতে অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট পরিচালনা করত। তবে যাত্রী সংকটের কারণে গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে তাদের একমাত্র আন্তর্জাতিক রুট, কলকাতা ফ্লাইট, স্থগিত রাখা হয়েছে।
যেসব যাত্রী আগেই টিকিট কিনেছিলেন, তাদের পূর্ণ অর্থ ফেরত দেওয়ার কথা জানিয়েছে সংস্থাটি। যদিও জানা গেছে, ২০ এপ্রিল থেকে তারা টিকিট বিক্রি বন্ধ করে দেয়। পরবর্তীতে ফের চালু করলেও ২ মে থেকে আবারো ফ্লাইট চলাচল পুরোপুরি বন্ধ করে দেয়। বর্তমানে অনলাইন টিকিট কেনার অপশনও বন্ধ রয়েছে।
নভোএয়ারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মফিজুর রহমান জানিয়েছেন, আন্তর্জাতিক রুট সম্প্রসারণ ও বড় উড়োজাহাজ কেনার পরিকল্পনা থাকলেও বৈশ্বিকভাবে বিমান ভাড়া ও ক্রয়ের সংকট, এবং বড় এয়ারলাইনের সঙ্গে প্রতিযোগিতা তাদের সামনে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করছি নতুন বিনিয়োগকারী আনতে। আলোচনা চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। বিনিয়োগকারী পেলে উড়োজাহাজ বিক্রি করব না এবং ফ্লাইটও বন্ধ থাকবে না। তবে বিনিয়োগ না পেলে তিন মাস ফ্লাইট বন্ধ রাখার পরিকল্পনা রয়েছে।’
ফ্লাইট বন্ধ থাকলেও, নভোএয়ার আশ্বস্ত করেছে যে এই সময়ের মধ্যে কর্মী ও কর্মকর্তারা
২০১৩ সালের ৯ জানুয়ারি যাত্রা শুরু করা নভোএয়ার এখন পর্যন্ত উড়োজাহাজ অধিগ্রহণে ৫০ মিলিয়ন ডলার এবং অবকাঠামো ও সহায়ক সরঞ্জামে ১০ মিলিয়ন ডলারের বেশি বিনিয়োগ করেছে। কিন্তু ২০১৮–১৯ অর্থবছর ছাড়া প্রতিটি বছরই সংস্থাটি লোকসান করেছে। কোভিড-১৯ মহামারি এবং ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি এ লোকসানে বড় ভূমিকা রেখেছে। এছাড়া, অভ্যন্তরীণ বাজার সংকুচিত হওয়ায় এবং যাত্রী চাহিদা কমে যাওয়ায় ব্যবসায়িক চ্যালেঞ্জ বেড়েছে।
নভোএয়ারের ভবিষ্যৎ এখন অনেকটাই নির্ভর করছে সম্ভাব্য বিনিয়োগকারীর ওপর। নতুন বিনিয়োগ না এলে কোম্পানিটির কার্যক্রম স্থায়ীভাবে বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে।