
প্রতিবেদক: বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার শাঁওইল বাজার এলাকার ১৬টি গ্রাম যেন এক বৃহৎ শিল্পপল্লি, যেখানে প্রধানত তাঁতশিল্পের অগ্রগতি লক্ষণীয়। এই শিল্পপল্লিতে কম্বল, চাদর, মোজা সহ নানা ধরনের কাপড় তৈরি হয়। পাশাপাশি, বগুড়া সদরে গড়ে উঠেছে হালকা প্রকৌশল (লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং) শিল্প, যেখানে কৃষি যন্ত্রপাতি তৈরির মাধ্যমে সমৃদ্ধি এসেছে।
এসএমই ফাউন্ডেশনের তথ্য অনুযায়ী, বগুড়ার তাঁত শিল্পপল্লিতে বছরে প্রায় ৭০০ কোটি টাকা এবং হালকা প্রকৌশল শিল্পপল্লিতে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকার লেনদেন হয়। এই দুই শিল্পপল্লি প্রায় এক লাখ মানুষের কর্মসংস্থান তৈরি করেছে।
একসময় আদমদীঘির তাঁতিরা সুতি ও সিল্ক সুতায় শাড়ি, গামছা তৈরি করতেন, তবে নব্বইয়ের দশক থেকে তাঁতিরা উলের সুতায় নজর দেন। বর্তমানে আদমদীঘির তাঁতশিল্প বা হ্যান্ডলুম ক্লাস্টার শাওইল বাজার কেন্দ্রিক হয়ে উঠেছে। এই শিল্পের সাথে প্রায় ৬০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান জড়িত।
তবে, ছোট উদ্যোক্তাদের জন্য অর্থায়ন, বিপণন, বাজার সংযোগ এবং কাঁচামালের দাম বৃদ্ধি সমস্যার সৃষ্টি করেছে। তবে এসএমই ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে এসব উদ্যোক্তাদের জন্য ক্লাস্টার চিহ্নিত করা হয়েছে, যার ফলে ঋণ পাওয়া সহজ হয়েছে এবং অন্যান্য সুবিধাও পাওয়া যাচ্ছে।
বগুড়ার তাঁতি ও হালকা প্রকৌশল শিল্পের আধুনিকীকরণের জন্য সহজ শর্তে ঋণ সুবিধা এবং শক্তিশালী অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ার দাবি উঠেছে। এগুলো বাস্তবায়িত হলে উৎপাদন খরচ কমবে, যা দেশের অর্থনীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
বগুড়ার শিল্পপল্লি সম্ভাবনাময় হলেও কিছু প্রতিবন্ধকতা মোকাবেলা করতে হবে। আধুনিক প্রযুক্তি এবং সঠিক অর্থায়ন ব্যবস্থার মাধ্যমে এই শিল্প আরও উন্নতির দিকে এগিয়ে যেতে পারে, যা দেশীয় অর্থনীতিতে আরও বড় ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে।