বাংলাদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য বার্জার পেইন্টসের ৫% নতুন শেয়ার

প্রতিবেদক: প্রায় দুই দশক পর বাংলাদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য নতুন করে ৫ শতাংশ শেয়ার ছাড়ছে বহুজাতিক কোম্পানি বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশ লিমিটেড। বিদ্যমান সাধারণ বিনিয়োগকারী ও প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের মধ্যে অধিকারমূলক বা রাইট শেয়ার আকারে এই নতুন শেয়ার ইস্যু করা হবে। গতকাল মঙ্গলবার  এই প্রস্তাব অনুমোদন করেছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

বিএসইসি জানিয়েছে, বার্জার পেইন্টস মোট ২৭ লাখ ২৮ হাজার ১১১টি রাইট শেয়ার ইস্যু করবে। প্রতিটি শেয়ারের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১ হাজার ১১০ টাকা—যার মধ্যে ১০ টাকা ফেস ভ্যালু এবং ১ হাজার ১০০ টাকা প্রিমিয়াম। এই প্রক্রিয়ায় কোম্পানিটি প্রায় ৩০৩ কোটি টাকা মূলধন সংগ্রহ করবে, যা মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চলে তৃতীয় কারখানা নির্মাণে ব্যয় করা হবে।

বার্জার পেইন্টস ২০০৬ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয় এবং তখন ৫ শতাংশ শেয়ার দেশীয় বিনিয়োগকারীদের মধ্যে বিক্রি করেছিল। তালিকাভুক্তির প্রায় ২০ বছর পর ফের ৫ শতাংশ শেয়ার ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। এতদিন কোম্পানির ৯৫ শতাংশ মালিকানাই ছিল বিদেশি উদ্যোক্তাদের হাতে। নতুন রাইট শেয়ার ইস্যুর মধ্যে ২৫ লাখ ৯১ হাজার ৬৯১টি শেয়ার পাওয়ার অধিকার থাকলেও, বিদেশি উদ্যোক্তারা সেগুলো গ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ফলে প্রায় ২২ লাখ শেয়ার সাধারণ বিনিয়োগকারীদের এবং ৪ লাখ শেয়ার কর্মীদের মধ্যে বণ্টন করা হবে।

রাইট শেয়ারের শর্ত অনুযায়ী, বিদ্যমান প্রতি ১৭টি শেয়ারের বিপরীতে ১টি রাইট শেয়ার ইস্যু করা হবে। তবে বিদেশি উদ্যোক্তারা এই শেয়ার গ্রহণ না করায় বিদ্যমান শেয়ারধারীরা বাস্তবে প্রতি ১৭টি শেয়ারের বিপরীতে প্রায় ১৬টি নতুন শেয়ার পাবেন, যা কোম্পানিতে তাদের অংশীদারিত্ব বাড়াবে।

এই রাইট শেয়ার ইস্যুর ফলে কোম্পানিটির মালিকানায় দেশীয় বিনিয়োগকারীদের অংশ ৫ শতাংশ থেকে বেড়ে ১০ শতাংশে উন্নীত হবে এবং বিদেশি উদ্যোক্তাদের অংশ কমে ৯৫ শতাংশ থেকে ৯০ শতাংশে নেমে আসবে। একই সঙ্গে কোম্পানির পরিশোধিত মূলধনও প্রায় ৩ কোটি টাকা বাড়বে—বর্তমানে যা ৪৬ কোটি টাকা থেকে বেড়ে ৪৯ কোটি টাকা হবে।

রাইট শেয়ারের অনুমোদনের খবরে আজ বুধবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে বার্জার পেইন্টসের শেয়ারের দাম কিছুটা কমেছে। লেনদেন শুরুর প্রথম এক ঘণ্টায় প্রতিটি শেয়ারের দাম প্রায় ৫ টাকা কমে দাঁড়ায় ১,৭৭০ টাকায়। তবে বাজারদরের তুলনায় নতুন রাইট শেয়ার প্রায় ৫০০ টাকা কম মূল্যে পাওয়ার সুযোগ থাকায় সাধারণ বিনিয়োগকারীদের জন্য এটি একটি আকর্ষণীয় প্রস্তাব হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।