
প্রতিবেদক: বিশ্বের কয়েকটি প্রধান ঋণমান নির্ধারণকারী সংস্থা গত কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশের ক্রেডিট রেটিং ধারাবাহিকভাবে কমিয়ে আসছে। এ প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ ব্যাংক দেশের অর্থনীতির বাস্তব চিত্র তুলে ধরে এসব সংস্থাকে রেটিং পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানিয়েছে। সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে কয়েকটি রেটিং এজেন্সির প্রতিনিধিদের সঙ্গে এক বৈঠকে এ বিষয়ে আলোচনা হয়। বৈঠক শেষে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, “বর্তমানে বিভিন্ন অর্থনৈতিক সূচকের অগ্রগতি রেটিং সংস্থাগুলোকে অবহিত করা হয়েছে। তারা অনেকটাই সন্তুষ্ট এবং আমরা তাদের কাছে রেটিংয়ের বিষয়টি নতুন করে বিবেচনার অনুরোধ জানিয়েছি।” তিনি আরও বলেন, ২০২৬ সালের নভেম্বরে বাংলাদেশ জাতিসংঘের স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বেরিয়ে যাবে, এবং উন্নয়ন সহযোগী ও বৈদেশিক ঋণপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে তখন একটি ভালো রেটিং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে। এজন্য রেটিং এজেন্সিগুলোকে বাস্তবসম্মত মূল্যায়নের ওপর গুরুত্ব দিতে বলা হয়েছে।
গত বছরের জুলাই মাসে বিশ্বের অন্যতম রেটিং সংস্থা এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল বাংলাদেশের ঋণমান ‘বিবি মাইনাস’ থেকে কমিয়ে ‘বি প্লাস’ করে। আর ফিচ রেটিংস গত মে মাসে দ্বিতীয়বারের মতো বাংলাদেশের ফরেন কারেন্সি ইস্যুয়ার ডিফল্ট রেটিং (IDR) একইভাবে ‘বিবি মাইনাস’ থেকে ‘বি প্লাস’-এ নামিয়ে আনে। যদিও প্রতিষ্ঠানগুলো দেশের অর্থনীতি-সম্পর্কিত পূর্বাভাসকে ‘স্থিতিশীল’ হিসেবে রেখে দেয়।
মূল্যস্ফীতি, ডলারের দর, নতুন মুদ্রানোট এবং দুর্বল ব্যাংক ব্যবস্থাপনা নিয়েও মন্তব্য করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র। তিনি বলেন, নতুন গভর্নর দায়িত্ব নেওয়ার পর এখনো কোনো নতুন নোট ছাপানো হয়নি। একটি ডিজাইনের নোট ছাপাতে ন্যূনতম ১৮ মাস সময় লাগে। বর্তমানে বাংলাদেশ ব্যাংক একযোগে ৯ ধরনের নতুন নোট ছাপানোর উদ্যোগ নিয়েছে, যার কিছু মে মাসেই বাজারে আসবে।
দুর্বল ব্যাংকের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এসব ব্যাংকের অনিয়মের কারণে তারল্য সংকট দেখা দেয়, ফলে বাংলাদেশ ব্যাংক টাকা ছাপিয়ে তাদের সহায়তা দেয়। এ সমস্যা চিহ্নিত করতে টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে এবং তাদের রিপোর্টের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইতিমধ্যে ব্যাংক রেজল্যুশন অ্যাক্ট কার্যকর করা হয়েছে। এছাড়া তিনি জানান, মূল্যস্ফীতি এখনো লক্ষ্যমাত্রার নিচে আসেনি, তবে কিছুটা হ্রাস পেয়েছে। ডলারের দামেও সামান্য হ্রাস দেখা যাচ্ছে।