
প্রতিবেদক: বাংলাদেশ ব্যাংক এবার কোনো ব্যাংকের সুবিধাভোগী মালিকদের বিরুদ্ধে প্রতারণামূলকভাবে তাদের সম্পদ বা তহবিল ব্যবহারের ক্ষেত্রে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারবে। এই সিদ্ধান্তের আওতায়, বাংলাদেশ ব্যাংক দুর্বল কোনো ব্যাংককে রেজল্যুশন করতে পারবে, যার মধ্যে অস্থায়ী প্রশাসক নিয়োগ, ব্যাংকের শেয়ার, সম্পদ ও দায় তৃতীয় পক্ষের কাছে হস্তান্তরের মতো ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
এ–সংক্রান্ত নতুন অধ্যাদেশটি গত বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদ থেকে অনুমোদন পেয়েছে এবং রাষ্ট্রপতির অনুমতি সাপেক্ষে এটি শিগগিরই জারি হবে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, এই অধ্যাদেশটি আগামী দিনগুলোতে বাংলাদেশের ব্যাংক খাতে শৃঙ্খলা ও জবাবদিহি বৃদ্ধি করবে এবং আমানতকারীদের স্বার্থ রক্ষা করবে।
অধ্যাদেশের খসড়ায় বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংক যদি কোনো ব্যাংককে আর কার্যকর মনে না করে বা সেটি দেউলিয়া হওয়ার পথে চলে, তাহলে সেটি সংশ্লিষ্ট ব্যাংকটির কার্যক্রম বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিতে পারবে। শুধু তা-ই নয়, ব্যাংকটির কার্যক্রম ও পরিচালনা অব্যাহত রাখতে এক বা একাধিক ব্রিজ ব্যাংক প্রতিষ্ঠার সুযোগও থাকবে। এসব ব্রিজ ব্যাংক পরবর্তীতে তৃতীয় পক্ষের কাছে বিক্রি করা যাবে।
ব্যাংক রেজল্যুশন অধ্যাদেশের মাধ্যমে বাংলাদেশের ব্যাংক খাতে সংকট ব্যবস্থাপনা কাউন্সিল গঠনও করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এই কাউন্সিলটির প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, এবং এর সদস্যরা বাংলাদেশের সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান, অর্থসচিব এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের তিনজন ডেপুটি গভর্নর।
এই অধ্যাদেশটি কার্যকর হলে, বাংলাদেশ ব্যাংকের ওপর আস্থা আরও দৃঢ় হবে, এমনটাই মনে করেন ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের (এবিবি) চেয়ারম্যান সেলিম আর এফ হোসেন। তিনি বলেন, ‘এটি পাস হলে ব্যাংক খাতের সংকট ব্যবস্থাপনা আরও শক্তিশালী হবে এবং সরকারের যে কোনো সংশোধন প্রয়োজন হলে তা পরে করা যাবে।
অধ্যাদেশের আওতায় ব্যাংক যদি তাদের কার্যক্রম বন্ধ করতে চায়, তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমতি ছাড়া তা করতে পারবে না। তবে, কোনো ব্যাংক যদি তার লাইসেন্স বাতিল করে, তাহলে বাংলাদেশ ব্যাংক সেটি অবসায়নে আদালতে আবেদন করবে এবং আদালত তাদের মনোনীত কাউকে অবসায়ক হিসেবে নিয়োগ দেবে।
ব্যাংক খাতের বর্তমান অবস্থা এবং সম্ভাব্য সংকটের মধ্যে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হতে পারে, যা সুশাসন এবং জবাবদিহি নিশ্চিত করতে সহায়ক হবে।