
প্রতিবেদক: রাজধানীর বিভিন্ন ব্যাংক শাখায় আগামীকাল সোমবার (২ জুন) থেকে নতুন নকশার কাগুজে নোট পাওয়া যাবে। সাধারণ মানুষ এসব নোট নিজ নিজ ব্যাংক শাখা থেকে সংগ্রহ করতে পারবেন। নতুন এই নোটগুলোতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতির পরিবর্তে বাংলাদেশের বিভিন্ন জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার প্রতিকৃতি ব্যবহৃত হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, আজ রোববার থেকে প্রাথমিকভাবে ২০, ৫০ ও ১০০০ টাকার নতুন নোট সীমিত পরিসরে বাজারে ছাড়া হয়েছে। এসব নোট প্রথমে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মতিঝিল অফিস এবং ঢাকার কিছু নির্দিষ্ট ব্যাংকে সরবরাহ করা হয়েছে। আগামীকাল সোমবার থেকে এসব ব্যাংক নতুন নোট বিতরণ শুরু করবে।
আজ যে ১০টি ব্যাংকে নতুন টাকা সরবরাহ করা হয়েছে, সেগুলো হলো: সোনালী, জনতা, অগ্রণী, রূপালী, পূবালী, উত্তরা, ডাচ্-বাংলা, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ, আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক এবং ব্র্যাক ব্যাংক। এই ব্যাংকগুলোর লোকাল অফিসগুলোতে টাকা পৌঁছেছে। আগামীকাল অন্যান্য ব্যাংকে সরবরাহ করা হবে। কোন ব্যাংক কোন শাখা থেকে নতুন টাকা দেবে, সে সিদ্ধান্ত সংশ্লিষ্ট ব্যাংক নিজস্বভাবে গ্রহণ করবে।
বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, ঈদের আগে সর্বোচ্চ ২০০ কোটি টাকার নতুন নোট ছাপানো সম্ভব হয়েছে। এর মধ্যে বেশির ভাগ নোট বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংকে সরবরাহ করা হচ্ছে। অবশিষ্ট অংশ বাংলাদেশ ব্যাংকের বিভিন্ন শাখা থেকে সাধারণ মানুষের মধ্যে বিতরণ করা হবে।
নতুন ১০০০, ৫০ ও ২০ টাকার নোটগুলো শতভাগ সুতি কাগজে ছাপা হয়েছে এবং প্রতিটি নোটে জলছাপ হিসেবে রয়েছে বেঙ্গল টাইগারের মুখ। ১০০০ টাকার নোটে বেগুনি রঙের আধিক্য, সামনের বাঁ পাশে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধ এবং পেছনে জাতীয় সংসদ ভবনের ছবি রয়েছে। ৫০ টাকার নোটে গাঢ় বাদামি রঙ, সামনের পাশে আহসান মঞ্জিল ও পেছনে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের ‘সংগ্রাম’ চিত্রকর্ম মুদ্রিত রয়েছে। ২০ টাকার নোটে সবুজ রঙের আধিক্য, সামনে কান্তজিউ মন্দির ও পেছনে পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহারের ছবি রয়েছে। সব নোটের মাঝখানে ব্যাকগ্রাউন্ডে শাপলা ফুলের চিত্র সংযোজিত হয়েছে।
গত আগস্টে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি সংবলিত সব ধরনের টাকা ও মুদ্রা ছাপা বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এমনকি পূর্বে ছাপানো নোটগুলোর বিতরণও স্থগিত করা হয়। ফলে বাজারে পুরোনো, ছেঁড়া ও ময়লা নোটে ভরপুর হয়ে ওঠে এবং নতুন টাকার চাহিদা তীব্র হয়ে পড়ে। এই প্রেক্ষাপটেই নতুন নোট ছাপিয়ে বাজারে ছাড়ার উদ্যোগ নেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংক স্পষ্ট করেছে যে, নতুন নোট বাজারে এলেও পূর্বে প্রচলিত সব কাগুজে নোট ও ধাতব মুদ্রা চালু থাকবে।