বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য ‘রোল মডেল’ হতে চায় বাংলাদেশ

প্রতিবেদক: সরেজমিন পরিদর্শনে চট্টগ্রাম-নারায়ণগঞ্জে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা, মিলছে ইতিবাচক সাড়া।

বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে প্রচলিত রীতিনীতির বাইরে গিয়ে সরাসরি মাঠে নিয়ে গিয়ে বাস্তব চিত্র দেখানোর উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ। এই লক্ষ্যেই শুরু হয়েছে দুই দিনের আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ সম্মেলন। আয়োজন করেছে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা)।

দেশে বিনিয়োগ করতে বিদেশিরা কী চান — তা জানাই এবার সম্মেলনের মূল বার্তা। সম্মেলনের প্রথম দিনেই প্রায় ৫০টি দেশের বিনিয়োগকারীরা চট্টগ্রামের কোরিয়ান ইপিজেড (কেইপিজেড) এবং মিরসরাই জাতীয় অর্থনৈতিক অঞ্চল (এনএসইজেড) পরিদর্শন করেন। বিদেশি বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে দেশীয় উদ্যোক্তারাও ছিলেন এই দলে।

পরিদর্শনকালে কেইপিজেড ও ইয়ংওয়ান করপোরেশনের চেয়ারম্যান কিহাক সাং বিনিয়োগকারীদের জানান, জমি ও অবকাঠামোগত সুবিধা এখানে পুরোপুরি প্রস্তুত। ব্যবসা পরিচালনায় জটিলতা নেই বললেই চলে। দ্রুত ব্যবসায়িক সনদসহ প্রয়োজনীয় সব সুবিধা মিলছে এখন।

চীনা বিনিয়োগকারী কেভিন উ বলেন, বর্তমান সরকার ব্যবসার পরিবেশ উন্নয়নে উদ্যোগ নিয়েছে। ভারতের বিনিয়োগকারী সুরেস কাপিতি জানান, বাংলাদেশে কমপ্লায়েন্ট ব্যাটারি রিসাইক্লিং প্ল্যান্ট স্থাপন করতে চান তিনি।

মিরসরাই ইকোনমিক জোন পরিদর্শন শেষে প্রকল্প পরিচালক মাহমুদ ফারুক জানান, এখানে বিনিয়োগকারীদের জন্য পানি, বিদ্যুৎসহ সব ইউটিলিটি সুবিধা নিশ্চিত করা হয়েছে।

এনএসইজেড ইতোমধ্যে ১৫৫টি দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠানের প্রায় ১৯ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ আকর্ষণ করেছে। এখানে ১১টি কারখানা উৎপাদনে গেছে, আরও ২৮টি নির্মাণাধীন।

সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে বিনিয়োগকারীরা নারায়ণগঞ্জের জাপান স্পেশাল ইকোনমিক জোন (এসইজেড) পরিদর্শনে যাবেন। সেখানেও প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা বিনিময়ের সুযোগ পাবেন তারা।

এদিকে, ঢাকার ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে দেশি-বিদেশি স্টার্টআপ উদ্যোক্তারা অংশ নিয়ে নিজেদের চাহিদা ও সমস্যার কথা তুলে ধরেন। সরকারের উপদেষ্টা, সচিব, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরসহ শীর্ষ কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।

বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক মাহমুদ বিন হারুন জানান, বিনিয়োগকারীদের জন্য এমন পরিবেশ তৈরি করতে চাই, যাতে তারা নিজেরাই হয়ে উঠেন বাংলাদেশের শুভেচ্ছাদূত।

তিনি বলেন, আমরা কী করছি, সেটা বড় কথা নয়। বিনিয়োগকারীরা কী চান — সেটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। তাই সরাসরি ইকোনমিক জোন দেখিয়ে বিনিয়োগের সুযোগ-সুবিধা বোঝানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।

বিডা চেয়ারম্যান স্বীকার করেন, এখনও দেশে ব্যবসা সংক্রান্ত কিছু জটিলতা রয়েছে। তবে এসব সমস্যা কাটিয়ে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরিতে কাজ চলছে।