
প্রতিবেদক: বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান বলেছেন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের প্রধান সমস্যা দুর্নীতি। এরপর অন্যতম সমস্যা ছিল ৩২০ কোটি মার্কিন ডলার বিল বকেয়া রাখা। এ কারণে জ্বালানি সরবরাহে সমস্যা তৈরি হয়েছিল। তবে আমরা দায়িত্ব নিয়ে বিশেষ উদ্যোগে এসব বিল শোধ করেছি। এখন মাত্র ৭০ কোটি ডলার বকেয়া আছে, যা স্বাভাবিক।
গতকাল বুধবার বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) উদ্যোগে আয়োজিত আগস্ট মাসিক আলোচনায় তিনি এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানের সঞ্চালনা করেন বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন। অনুষ্ঠানের শুরুতে দেশের বিনিয়োগ ও সামগ্রিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে একটি উপস্থাপনা দেন তিনি। গত বছরের আগস্টে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর তিনি বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নেন এবং দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে বিনিয়োগ পরিস্থিতি নিয়ে মাসিক ওয়েবিনার আয়োজনের উদ্যোগ নেন। এবারের ওয়েবিনার ছিল চতুর্থ আয়োজন।
চৌধুরী আশিক মাহমুদ তার উপস্থাপনায় জানান, গত এক বছরে বেশ কিছু ইতিবাচক পরিবর্তন হয়েছে। এ সময়ে মূল্যস্ফীতি সাড়ে ১০ শতাংশ থেকে কমে সাড়ে ৮ শতাংশে নেমেছে। পারচেজিং ম্যানেজারস ইনডেক্স (পিএমআই) ৪৩ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে বেড়ে ৬১ দশমিক ৫ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২৩ বিলিয়ন থেকে বেড়ে ২৪ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া, যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য রপ্তানিতে ট্রাম্প প্রশাসনের আরোপ করা পাল্টা শুল্কের বিষয়টিও সফলভাবে সমাধান করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, আর্থিক খাতে ৩২টি সংস্কার উদ্যোগ হাতে নেওয়া হয়েছিল। এর মধ্যে ১৮টি শেষ হয়েছে, ৬টির কাজ চলমান, ৭টির সূচি নির্ধারিত এবং একটি বাতিল করা হয়েছে। বিনিয়োগকারীদের জন্য এক দরজায় সব সেবা নিশ্চিত করতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। নতুন বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য আলাদা কর্মকর্তা নিয়োগও দেওয়া হয়েছে।
ওয়েবিনারে যোগাযোগব্যবস্থা প্রসঙ্গে ফাওজুল কবির খান বলেন, ‘আমাদের দেশে নদী, রেল ও সড়কনির্ভর যোগাযোগব্যবস্থা রয়েছে। আমরা একটি সমন্বিত যোগাযোগব্যবস্থা চালুর চেষ্টা করছি। এ খাতে কী ধরনের উদ্যোগ প্রয়োজন, তা খুঁজে বের করে সমাধান করার প্রচেষ্টা চলছে।’ নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও ইলেকট্রিক পরিবহন বিষয়ে তিনি আরও বলেন, ‘আমরা ইতিমধ্যে এ দুই খাতের জন্য নীতিমালা প্রণয়ন করেছি। বিনিয়োগকারীরা এগিয়ে আসলে প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়া হবে।’
এদিকে, উপস্থাপনায় আশিক চৌধুরী জানান, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত প্রথম পাঁচ মাসে বাংলাদেশ প্রায় ১০০ কোটি ডলারের বিনিয়োগ প্রস্তাব পেয়েছে। এটি দেশের বিনিয়োগ পরিস্থিতির জন্য একটি আশাব্যঞ্জক অগ্রগতি। তিনি আরও জানান, প্রাপ্ত প্রস্তাবগুলোর মধ্যে প্রায় ২০ শতাংশ ইতোমধ্যে চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে, যার মধ্যে রয়েছে চুক্তি স্বাক্ষর, জমি ইজারা ও বরাদ্দপত্র প্রদান।