বিশ্ববাজারে সোনার দাম ইতিহাস গড়ল, দেশের বাজারেও দাম দুই লাখ ছাড়াল

প্রতিবেদক: বিশ্ববাজারে সোনার দাম নতুন ইতিহাস গড়েছে। গতকাল মঙ্গলবার প্রতি আউন্স সোনার দাম ৪,০০০ ডলার ছুঁয়েছে। ভূরাজনৈতিক অনিশ্চয়তা, বিশ্ব অর্থনীতির ধীরগতি এবং যুক্তরাষ্ট্রে নীতি সুদ কমার সম্ভাবনা—সব মিলিয়ে বিনিয়োগকারীরা নিরাপদ সম্পদ হিসেবে সোনার দিকে ঝুঁকেছেন।

চলতি বছর এখন পর্যন্ত সোনার দাম ৫১ শতাংশ বেড়েছে। বিশ্লেষকেরা বলছেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর সোনা কেনা বেড়ে যাওয়া, স্বর্ণনির্ভর এক্সচেঞ্জ-ট্রেডেড ফান্ডে (ইটিএফ) বিনিয়োগ বৃদ্ধি, মার্কিন ডলারের দুর্বলতা এবং খুচরা বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ—এসব কারণে সোনার দামের এই উল্লম্ফন ঘটেছে। বাণিজ্যযুদ্ধ ও ভূরাজনৈতিক টানাপোড়েনও বিনিয়োগকারীদের নিরাপদ আশ্রয় হিসেবে সোনা বেছে নিতে প্রভাবিত করছে।

বিশ্ববাজারের সঙ্গে তাল মিলিয়ে দেশের বাজারেও সোনার দাম বাড়ছে। গতকাল মঙ্গলবার দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো সোনার দাম দুই লাখ টাকা ছাড়িয়েছে। জুয়েলার্স সমিতি জানিয়েছে, আজ থেকে ২২ ক্যারেটের হলমার্ক করা সোনা এক ভরিতে ২,০২,১৯৫ টাকা, ২১ ক্যারেট ১,৯৩,০০৪ টাকা, ১৮ ক্যারেট ১,৬৫,৪৩১ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির সোনা ১,৩৭,৪৭২ টাকায় বিক্রি হবে।

অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন, কম সুদের হার এবং অনিশ্চিত অর্থনৈতিক পরিবেশে সোনার দাম সাধারণত বাড়ে। দীর্ঘমেয়াদে সোনা মূল্যস্ফীতির বিরুদ্ধে একটি নির্ভরযোগ্য রক্ষাকবচ হিসেবে কাজ করে।

যুক্তরাষ্ট্রে শাটডাউন থাকায় সরকারি অর্থনৈতিক তথ্য না পাওয়া এবং ফেডারেল রিজার্ভের সম্ভাব্য সুদ হ্রাস—এসবও সোনার দামের বৃদ্ধিতে প্রভাব ফেলছে। মার্কিন বিশ্লেষকরা ধারণা করছেন, অক্টোবরের বৈঠকে ফেডারেল রিজার্ভ ১ চতুর্থাংশ পয়েন্ট সুদ কমাতে পারে।

গোল্ডম্যান স্যাকসের পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০২৬ সালের ডিসেম্বরের জন্য সোনার দাম ৪,৩০০–৪,৯০০ ডলার পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে। চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংকও সেপ্টেম্বরে টানা একাদশ মাসের মতো রিজার্ভের জন্য সোনা কিনেছে।

গোল্ড প্রাইস ডট অর্গের তথ্যানুসারে, গত এক মাসে সোনার দাম বেড়েছে ৮.৪৮%, ছয় মাসে ২৮.২১%, এবং গত এক বছরে ৫১.৫২%।