বিশ্বব্যাংকের নতুন হিসাব: বাংলাদেশে অতিদারিদ্র্যের হার বেড়ে ৮%

প্রতিবেদক: আন্তর্জাতিক দারিদ্র্যসীমা বা অতিদারিদ্র্য পরিমাপের সংজ্ঞা হালনাগাদ করেছে বিশ্বব্যাংক। সংস্থাটি জানিয়েছে, এখন থেকে ক্রয়ক্ষমতা সমতা (পিপিপি) অনুসারে মৌলিক চাহিদা পূরণের জন্য কারও প্রতিদিন গড়ে ৩ ডলারের পণ্য ও সেবা কেনার সামর্থ্য না থাকলে তাঁকে ‘অতিদরিদ্র’ হিসেবে গণ্য করা হবে। এর মানে, তিনি আন্তর্জাতিক দারিদ্র্যসীমার নিচে রয়েছেন। এর আগে ২০১৭ সাল থেকে ২ দশমিক ১৫ ডলার ছিল এই সীমা।

বিশ্বব্যাংক চলতি মাসে নতুন এই আন্তর্জাতিক দারিদ্র্যসীমার সংজ্ঞা ও হিসাব পদ্ধতি প্রকাশ করেছে। এতে শুধু বৈশ্বিক সীমা নয়, নিম্ন মধ্যম ও উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশগুলোর জন্য নির্ধারিত আলাদা দারিদ্র্যসীমাও হালনাগাদ করা হয়েছে। নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশের ক্ষেত্রে আগের সীমা ছিল ৩ দশমিক ৬৫ ডলার, যা এখন বাড়িয়ে ৪ দশমিক ২০ ডলার করা হয়েছে। উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশের ক্ষেত্রে ৬ দশমিক ৮৫ ডলার থেকে বাড়িয়ে ৮ দশমিক ৩০ ডলারে উন্নীত করা হয়েছে এই সীমা।

এই নতুন সংজ্ঞা বা দারিদ্র্য সীমা বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, ২০২২ সালে পিপিপি ভিত্তিতে বাংলাদেশের ৮ শতাংশ মানুষ প্রতিদিন ৩ ডলারের কম ব্যয় করতে পারত। অর্থাৎ, তারা নতুন সংজ্ঞা অনুসারে অতিদরিদ্র। আগের ২.১৫ ডলারের ভিত্তিতে এই হার ছিল ৫ শতাংশ।

বাংলাদেশ বর্তমানে নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশ হওয়ায় ৪.২০ ডলারের সীমা প্রযোজ্য। এই হারে হিসাব করলে ২০২২ সালে দেশের প্রায় ২৪ দশমিক ৪৩ শতাংশ মানুষ অতিদারিদ্র্যের মধ্যে ছিল। আগের সংজ্ঞা অনুযায়ী এই হার ছিল ৩০ শতাংশ।

বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, নতুন সংজ্ঞা অনুসারে বিশ্বব্যাপী প্রতি ১০ জনে একজন অতিদরিদ্র হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। বর্তমানে প্রায় ৮১ কোটি মানুষ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অতিদারিদ্র্যের মধ্যে বাস করছে।

উল্লেখ্য, আন্তর্জাতিক দারিদ্র্যসীমার হিসাব পদ্ধতি প্রথম হালনাগাদ হয় ২০০১ সালে। এরপর তা সংশোধন করা হয় ২০০৮, ২০১৫ ও ২০২২ সালে। সর্বশেষ হালনাগাদটি হলো চলতি (২০২5 সালের) জুন মাসে। মধ্যম আয়ের দেশগুলোর দারিদ্র্য পরিস্থিতি আরও সূক্ষ্মভাবে বিশ্লেষণ করতে গিয়ে ২০১৭ সাল থেকেই বিশ্বব্যাংক দুটি নতুন সীমা নির্ধারণ করে—একটি নিম্ন মধ্যম, অপরটি উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশের জন্য।