বিশ্বব্যাপী বাণিজ্য উত্তেজনায় তেলের চাহিদা কমছে: ওপেক ও আইইএ’র পূর্বাভাসে উদ্বেগ

অনলাইন ডেক্স: বিশ্বব্যাপী বাণিজ্যযুদ্ধের প্রভাব এবং যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শুল্ক নীতির কারণে ২০২৫ ও ২০২৬ সালে বিশ্বব্যাপী অপরিশোধিত তেলের চাহিদা কমে যেতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে তেল উৎপাদনকারী দেশগুলোর জোট ওপেক (OPEC)। এছাড়া, আন্তর্জাতিক জ্বালানি সংস্থা (IEA)ও তাদের পূর্বাভাসে উল্লেখযোগ্য হারে চাহিদা বৃদ্ধির হার কমিয়েছে।​

রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওপেক তাদের পূর্ববর্তী পূর্বাভাস সংশোধন করে জানিয়েছে, ২০২৫ সালে বিশ্বব্যাপী জ্বালানি তেলের দৈনিক চাহিদা ১৩ লাখ ব্যারেল এবং ২০২৬ সালে ১২ লাখ ৮০ হাজার ব্যারেল বাড়তে পারে। এই দুটি পূর্বাভাসই আগের তুলনায় দৈনিক গড়ে ১ লাখ ৫০ হাজার ব্যারেল কম। এছাড়া, ওপেক বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস ৩.১ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩ শতাংশে নামিয়ে এনেছে। ২০২৬ সালের প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাসও ৩.২ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩.১ শতাংশ করা হয়েছে। ​

আন্তর্জাতিক জ্বালানি সংস্থা (IEA) তাদের মাসিক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ২০২৫ সালে বিশ্বজুড়ে জ্বালানি তেলের দৈনিক চাহিদা ৭ লাখ ৩০ হাজার ব্যারেল বাড়তে পারে, যা আগের পূর্বাভাসের তুলনায় ৩ লাখ ব্যারেল কম। ২০২৬ সালে এই বৃদ্ধির হার আরও কমে ৬ লাখ ৯০ হাজার ব্যারেল হতে পারে। IEA এই হ্রাসের পেছনে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের দুর্বল চাহিদা এবং বৈশ্বিক অর্থনৈতিক দুর্বলতাকে দায়ী করেছে। ​

বাণিজ্য উত্তেজনা এবং ওপেক প্লাসের সম্ভাব্য উত্তোলন বৃদ্ধির কারণে চলতি মাসে জ্বালানি তেলের দাম পড়েছে। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ২ এপ্রিল পাল্টা শুল্ক আরোপের পর জ্বালানি তেলের দাম চার বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে বা ব্যারেলপ্রতি ৬০ ডলারে নেমে আসে। ​

বিশ্বের বৃহত্তম দুই অর্থনীতি যুক্তরাষ্ট্র ও চীন বাণিজ্যযুদ্ধে জড়িয়ে পড়ায় তেলের চাহিদা সবচেয়ে বেশি কমবে এই দুই দেশে। এ ছাড়া উদীয়মান বা উন্নয়নশীল দেশগুলোতেও চাহিদা কমবে। বিশ্ব অর্থনীতির এই অনিশ্চয়তা এবং বাণিজ্য উত্তেজনার কারণে জ্বালানি তেলের বাজারে ভবিষ্যতে আরও অস্থিরতা দেখা দিতে পারে।