
প্রতিবেদক: পণ্যের সরবরাহ শৃঙ্খলায় ব্যয় বৃদ্ধি বর্তমানে বিশ্বজুড়ে ব্যবসা-বাণিজ্যের অন্যতম প্রধান উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠেছে। পরিবর্তনশীল বাণিজ্যনীতি, উচ্চ শুল্ক, পরিবহন বিলম্ব এবং কাঁচামালের সংকটের কারণে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলোর পরিচালন খরচ বাড়ছে। এর ফলে বিভিন্ন খাতের কোম্পানির আয় কমে যাচ্ছে এবং তাদের লাভজনকতা মারাত্মকভাবে চাপে পড়ছে।
এই বাস্তবতা উঠে এসেছে এইচএসবিসি পরিচালিত সাম্প্রতিক ‘গ্লোবাল ট্রেড পালস’ জরিপে। জরিপ অনুযায়ী, বিশ্বের ১৩টি দেশের ৫ হাজার ৭০০টি কোম্পানির শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের মধ্যে অধিকাংশই আশঙ্কা করছেন, সরবরাহ সংকট ও ব্যয় বৃদ্ধির কারণে তাদের গড় আয় প্রায় ১৮ শতাংশ কমে যেতে পারে।
বাংলাদেশের চিত্র আরও উদ্বেগজনক। জরিপে অংশ নেওয়া বাংলাদেশের ২৫০টি প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তাদের আয়ের ক্ষতির হার বৈশ্বিক গড়ের তুলনায় প্রায় ৫ শতাংশ বেশি হতে পারে। অর্থাৎ বাংলাদেশের ব্যবসা খাতে গড় আয়ের ক্ষতি হতে পারে ২৩ শতাংশ পর্যন্ত। বিশেষ করে, পণ্য পরিবহনে বিলম্ব বা সরবরাহ ব্যবস্থায় বাধা দেখা দিলে দেশের কোম্পানিগুলো তুলনামূলকভাবে বেশি ক্ষতির মুখে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এইচএসবিসি জানিয়েছে, শুল্ক-কর ও বাণিজ্যিক অনিশ্চয়তার কারণে আয় ও ব্যয়—উভয় ক্ষেত্রেই চাপে রয়েছে কোম্পানিগুলো। জরিপে দেখা গেছে, দুই-তৃতীয়াংশ প্রতিষ্ঠান ইতোমধ্যে শুল্ক ও অনিশ্চয়তার কারণে ব্যয়বৃদ্ধির সম্মুখীন হয়েছে এবং প্রায় ৭০ শতাংশ মনে করছে, ভবিষ্যতেও এই চাপ অব্যাহত থাকবে বা আরও খারাপ হতে পারে।
তবে আশার বিষয় হলো, বাংলাদেশের অনেক প্রতিষ্ঠান এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় দীর্ঘমেয়াদি কৌশল পুনর্গঠনের উদ্যোগ নিচ্ছে। এই প্রসঙ্গে এইচএসবিসি বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাহবুব উর রহমান বলেন, “বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা এই পরিবর্তনশীল পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নিচ্ছেন এবং তাঁদের মধ্যে একটি আশাবাদী মনোভাব দেখা যাচ্ছে, যা জরিপেও প্রতিফলিত হয়েছে।