
প্রতিবেদক: বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের পাঁচ দিনব্যাপী বৈঠকে প্রধানত বাণিজ্য ও ওয়াশিংটন-বেইজিং উত্তেজনা প্রশমন নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তবে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ফেডারেল রিজার্ভ এবং আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে আক্রমণ করার কারণে বিশ্বের কেন্দ্রীয় ব্যাংকারদের মাঝে উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে। ট্রাম্পের ফেড চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েলকে বরখাস্ত করার হুমকি ও বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বেরিয়ে না যাওয়ার সিদ্ধান্তের পর নীতিপ্রণেতারা স্বস্তি প্রকাশ করেছেন।
তবে, ফেডের রাজনৈতিকীকরণ এবং আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর দুর্বলতার আশঙ্কা এখনো দূর হয়নি। ট্রাম্পের এসব পদক্ষেপের কারণে মার্কিন ডলার, যা এত দিন বিশ্বের ‘নিরাপদ মুদ্রা’ হিসেবে বিবেচিত হয়েছে, তার ওপর আস্থা কমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের এই ভূমিকা বিশ্বের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও অর্থমন্ত্রীদের কাছে একটি বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে, তা হলো, বিশ্বব্যাংক এবং আইএমএফসহ আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা কি এখনো কার্যকর থাকবে?
বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফ দুইটি প্রতিষ্ঠানই ১৯৪৪ সালের ব্রেটন উডস কনফারেন্সে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, এবং যুক্তরাষ্ট্রই এ দুটি প্রতিষ্ঠানের অন্যতম পৃষ্ঠপোষক। অস্ট্রেলিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর রবার্ট হোলজম্যান বলেন, “এই সপ্তাহ ছিল স্বস্তির সপ্তাহ।” তিনি মনে করেন, যদিও মার্কিন প্রশাসনের অবস্থানে কিছু পরিবর্তন এসেছে, তবুও যুক্তরাষ্ট্রের চূড়ান্ত অবস্থান নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।
এদিকে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের অভিন্ন মুদ্রা ‘ইউরো’ বর্তমানে কিছুটা গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে। তবে, বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ইউরো এখনো ডলারের স্থান নিতে পারবে না। ইউরো মুদ্রায় রিজার্ভের পরিমাণ বর্তমানে ২০ শতাংশ, যা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে। তবে, যেসব দেশ ইউরো ব্যবহার করে, তাদের মধ্যে কেবল জার্মানির ঋণমানই বিনিয়োগকারীদের কাছে আকর্ষণীয়।
বিশ্লেষকদের মতে, যুক্তরাষ্ট্র যতই অস্থিতিশীল হোক, বিশ্বের রিজার্ভ মুদ্রা হিসেবে ইউরো এখনও ডলারের বিকল্প হতে পারবে না। বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনৈতিক শক্তি হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের ডলার এবং দুটি ব্রেটন উডস প্রতিষ্ঠান এখনও বৈশ্বিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় প্রধান ভূমিকা পালন করছে।