বেক্সিমকোর সালমান এফ রহমানসহ একাধিকজনের বিরুদ্ধে পুঁজিবাজারে অনিয়ম: ১০০ কোটির জরিমানা, আজীবন নিষিদ্ধ

প্রতিবেদক: পুঁজিবাজারে বন্ড ইস্যুতে প্রতারণার অভিযোগে বেক্সিমকো গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শিল্প ও বাণিজ্য উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানকে ১০০ কোটি টাকা জরিমানা করেছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। একইসঙ্গে তাকে আজীবনের জন্য পুঁজিবাজারে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে।

সালমান এফ রহমানের পাশাপাশি তার ছেলে সায়ান এফ রহমানকেও একই অনিয়মের দায়ে ৫০ কোটি টাকা জরিমানা এবং আজীবনের জন্য পুঁজিবাজার থেকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

বিএসইসির ৯৬৫তম কমিশন সভায় (৩০ জুলাই, মঙ্গলবার) এসব সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। পরদিন বুধবার সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়।

কমিশনের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, “শ্রীপুর টাউনশিপ গ্রিন জিরো কুপন বন্ড” নামে একটি বন্ড ২০২৩ সালের ৪ জুন ১,৫০০ কোটি টাকা অভিহিত মূল্যে ও ১,০০০ কোটি টাকার ইস্যু মূল্যে অনুমোদন দেওয়া হয়। মাত্র চার দিনের ব্যবধানে কোম্পানিটি ২৪৮ কোটি টাকা ভূমি উন্নয়নের জন্য সংগ্রহ করে, যা কমিশনের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ ছিল।

যদিও বন্ডটির জামিনদার ছিল আইএফআইসি ব্যাংক, প্রতিষ্ঠানটি বন্ডটি ইস্যু করেনি। অথচ “আইএফআইসি আমার বন্ড” নামক বিজ্ঞাপন দিয়ে বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহ করা হয়। উল্লেখ্য, সালমান এফ রহমান তখন আইএফআইসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান ছিলেন।

আরও এক অনিয়মের ঘটনা ঘটে “বেক্সিমকো সিকিউরড কনভার্টিবল অর রিডিমেবল অ্যাসেট-ব্যাকড গ্রিন সুকুক” বন্ডে। ২০২১ সালের ২৩ জুন ৩,০০০ কোটি টাকার এ বন্ড অনুমোদন দেওয়া হয়। কিন্তু শর্ত লঙ্ঘন করে বেক্সিমকো কর্তৃপক্ষ প্রাথমিকভাবে অনুমোদিত ৫০০ কোটি টাকার মধ্যে ৩২৫ কোটি টাকা নিজেরা সংগ্রহ করে, যা প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের স্বার্থকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে।

এই অনিয়মের ঘটনায় বেক্সিমকোর পরিচালক নাসিমা রহমান, ড. শামসুন আহমেদ এবং এ এম আহসান উল্লাহকে ৫ বছরের জন্য পুঁজিবাজার থেকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে।

এছাড়া আইএফআইসি ব্যাংকের তৎকালীন মনোনীত পরিচালক নাজমুস সাকিব, গোলাম মোস্তফা, জাফর ইকবাল, কামরুন নাহার আহমেদ এবং সাবেক স্বতন্ত্র পরিচালক শুদ্ধাংশু শেখর বিশ্বাসকে সতর্ক করা হয়েছে।

রেটিং প্রতিষ্ঠান ইসিআরএল-কে ১০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। একইসঙ্গে এই বন্ডের নিরীক্ষক প্রতিষ্ঠান এমজে আবেদিন অ্যান্ড কো. ও গ্রিন ভ্যালিডেশন প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান ইসিআরএলের বিরুদ্ধেও বিধি লঙ্ঘনের প্রমাণ পাওয়া গেছে।