
অনলাইন ডেক্স: দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যে বিদ্যমান ভ্যাট বৈষম্য নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ব্যবসায়ী ও অর্থনীতিবিদরা। একটি অংশ নিয়মিত ভ্যাট দিলেও বেশিরভাগ ব্যবসায়ী তা এড়িয়ে যাচ্ছেন। ফলে, সৎ ব্যবসায়ীরা প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়ছেন। নতুন করে ভ্যাট বৃদ্ধির ফলে এই বৈষম্য আরও প্রকট হয়েছে।
‘ভোক্তার কাঁধে বাড়তি করের বোঝা উত্তরণে করণীয়’ শীর্ষক এক গোলটেবিল আলোচনায় এ বিষয়ে মত দেন সংশ্লিষ্টরা। কম আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম। উপস্থিত ছিলেন অর্থনীতিবিদ এম এম আকাশ, মুস্তফা কে মুজেরী, বিকেএমইএর সভাপতি মোহাম্মদ হাতেমসহ ব্যবসায়ী ও গবেষকরা।
প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান আহসান খান চৌধুরী বলেন, কর ও ভ্যাটের হার যুক্তিসঙ্গত হলে ব্যবসা-বাণিজ্য আরও সমৃদ্ধ হবে। সরকারের সঙ্গে ব্যবসায়ীদের যোগাযোগ বাড়ানোর ওপরও তিনি গুরুত্ব দেন।
অন্যদিকে, খাদ্যপণ্যকে ভ্যাটমুক্ত রাখার দাবি জানিয়ে বাংলাদেশ অটো বিস্কুট অ্যান্ড ব্রেড ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শফিকুর রহমান ভূঁইয়া বলেন, ভ্যাটের কারণে পণ্যের পরিমাণ কমাতে হচ্ছে, যা ভোক্তাদের জন্য অসুবিধার সৃষ্টি করছে। সুপারশপের পণ্যে ভ্যাট আরোপ হলেও পাশের মুদিদোকানে তা না থাকায় ভোক্তারা বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন বলে মন্তব্য করেন সুপারমার্কেট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. জাকির হোসেন।
বাংলাদেশ অ্যাগ্রো প্রসেসরস অ্যাসোসিয়েশনের এম এ হাশেম বলেন, প্রক্রিয়াজাত খাদ্যে বাড়তি ভ্যাট ও শুল্কের ফলে ভোক্তারা কম কিনছেন, যার নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে কৃষকদের ওপরও।
অর্থনীতিবিদ মুস্তফা কে মুজেরী সরকারের ভ্যাট বৃদ্ধির সিদ্ধান্তকে “ভুল সময়ে নেওয়া ভুল সিদ্ধান্ত” হিসেবে আখ্যা দিয়ে বলেন, এটি মূল্যস্ফীতির সমস্যার সমাধান করতে পারছে না, বরং ঋণের সুদের হার ও উৎপাদন ব্যাহত করছে।
পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান এম মাসরুর রিয়াজ বলেন, করের হার কমালে বেসরকারি বিনিয়োগ বৃদ্ধি পাবে এবং দীর্ঘমেয়াদে রাজস্বও বাড়বে।
কর প্রশাসনের অটোমেশন এবং দীর্ঘমেয়াদি সংস্কারের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম। তিনি বলেন, এসব সংস্কার কার্যকর করা গেলে রাজস্ব আদায় বাড়বে এবং ব্যবসা-বাণিজ্যে সমতা আসবে।