ব্যাংক দিচ্ছে বিবাহ ঋণ

প্রতিবেদক: বিয়ের পরিকল্পনা করছেন, কিন্তু হাতে টাকাপয়সার টান? এই সমস্যার সহজ সমাধান দিচ্ছে ব্যাংকগুলো। বর্তমানে দেশের বেশ কয়েকটি ব্যাংক ‘বিবাহ ঋণ’ নামে বিশেষ একটি ঋণ সুবিধা চালু করেছে। পাশাপাশি, সাধারণ ‘ব্যক্তিগত ঋণ’ বা পারসোনাল লোনের আওতায়ও বিয়ের খরচ চালানো সম্ভব। এসব ঋণ সাধারণত জামানত ছাড়া দেওয়া হয় এবং তা ব্যাংক ও গ্রাহকের আর্থিক সম্পর্কের ভিত্তিতে নির্ধারিত হয়।

বিয়ের খরচ মেটাতে ব্যাংকগুলো ২৫ হাজার টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ২০ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ দিয়ে থাকে। এসব ঋণ সাধারণত ১ থেকে ৫ বছরের মধ্যে মাসিক কিস্তিতে পরিশোধ করতে হয়। তবে কিস্তির সংখ্যা যত বেশি হবে, সুদের হারও তত বাড়ে। আবেদনকারীর মাসিক আয়, চাকরির ধরন, চাকরির অভিজ্ঞতা ও ব্যাংকে লেনদেনের ইতিহাস অনুযায়ী ঋণের পরিমাণ নির্ধারিত হয়। আয় বেশি ও স্থায়ী চাকরিতে থাকা ব্যক্তিরা এই ঋণ পাওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পান।

বর্তমানে এনসিসি ব্যাংক, উত্তরা ব্যাংক, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, ইউসিবি এবং সীমান্ত ব্যাংক ‘বিবাহ ঋণ’ সরাসরি দিয়ে থাকে। অনেক ব্যাংকে আবার ব্যক্তিগত ঋণের আওতায়ও বিয়ের খরচ চালানো যায়। এনসিসি ব্যাংক ১ থেকে ২০ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ দেয়; উত্তরা ব্যাংক ২৫ হাজার থেকে ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ দেয়, যার পরিশোধকাল ১ থেকে ৩ বছর। মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক থেকে ২ থেকে ২০ লাখ টাকার ঋণ পাওয়া যায় এবং ইউসিবি থেকেও একই পরিমাণ ঋণ নেওয়া সম্ভব, যেটা ৫ বছরের মধ্যে পরিশোধ করতে হয়।

বিজিবি সদস্যদের জন্য সীমান্ত ব্যাংক একটি বিশেষ বিবাহ ঋণ অফার করে থাকে। এখানে সাধারণ সদস্যরা ৫০ হাজার থেকে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ নিতে পারেন, যেটা নিজ বা সন্তানের বিয়ের জন্য প্রযোজ্য। ঋণ পাওয়ার জন্য প্রার্থীর বয়স ২৫ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে হতে হবে এবং চাকরির অভিজ্ঞতা থাকতে হবে কমপক্ষে ৬ বছর। সন্তানের বিয়ের জন্য সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৫৬ বছর।

বিবাহ ঋণ পেতে হলে জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্ট সাইজ ছবি, চাকরির প্রমাণপত্র (যেমন অফিস আইডি কার্ড বা নিয়োগপত্র), সর্বশেষ ৩ থেকে ৬ মাসের বেতন ভাউচার, ব্যাংক হিসাব বিবরণী, কর শনাক্তকরণ নম্বর (টিআইএন) এবং কিছু ক্ষেত্রে এনওসি জমা দিতে হয়। যেহেতু এই ঋণ নির্দিষ্ট উদ্দেশ্যের জন্য দেওয়া হয়, তাই প্রয়োজনে বিয়ের কার্ড, ভ্রমণ পরিকল্পনার কপি বা চিকিৎসার কাগজপত্রও লাগতে পারে। কিছু ব্যাংক বর বা কনের সাম্প্রতিক ছবি জমা দিতেও বলে।

সব মিলিয়ে বলা যায়, টাকার অভাবে বিয়ের পরিকল্পনায় দেরি করার প্রয়োজন নেই। নির্দিষ্ট শর্ত পূরণ করলে সহজেই ব্যাংক থেকে বিবাহ ঋণ পাওয়া যায়। তবে ঋণ নেওয়ার আগে সুদের হার, পরিশোধ পরিকল্পনা ও অন্যান্য শর্তাবলি ভালোভাবে যাচাই করে নেওয়া বুদ্ধিমানের কাজ।