ভারতের ছয় কোম্পানির বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা, ট্রাম্পের পাল্টা শুল্ক ঘোষণাও

প্রতিবেদক: ইরানের পেট্রোলিয়াম ও পেট্রোকেমিক্যাল পণ্যের বাণিজ্যে যুক্ত থাকার অভিযোগে ভারতের অন্তত ছয়টি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। একইসঙ্গে বিশ্বব্যাপী আরও ২০টি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধেও একই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। বুধবার দেওয়া এক বিবৃতিতে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর জানায়, এসব ভারতীয় প্রতিষ্ঠান ইরানের জ্বালানি পণ্যের লেনদেনে ইচ্ছাকৃতভাবে জড়িত থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন করেছে।

নিষেধাজ্ঞায় অভিযুক্ত ভারতীয় প্রতিষ্ঠানগুলো হলো: অ্যালকেমিক্যাল সলিউশনস, গ্লোবাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল কেমিক্যালস, জুপিটার ডাই কেম, রমনিকলাল এস গোসালিয়া অ্যান্ড কোম্পানি, পার্সিসটেন্ট পেট্রোকেম ও কাঞ্চন পলিমার্স। সবচেয়ে বড় অভিযোগ উঠেছে অ্যালকেমিক্যাল সলিউশনস প্রাইভেট লিমিটেডের বিরুদ্ধে, যেটি ২০২৪ সালে ৮ কোটি ৪০ লাখ ডলারেরও বেশি মূল্যের ইরানি পণ্য আমদানিতে জড়িত ছিল। গ্লোবাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল কেমিক্যালস, জুপিটার ডাই কেম এবং রমনিকলাল এস গোসালিয়া অ্যান্ড কোম্পানিও কয়েক কোটি ডলারের ইরানি পেট্রোকেমিক্যাল, বিশেষ করে মিথানল ও টলুইন কেনার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছে। পার্সিসটেন্ট পেট্রোকেম ১ কোটি ৪০ লাখ ডলারের পণ্য এবং কাঞ্চন পলিমার্স ১৩ লাখ ডলারের পলিথিন পণ্য কিনেছে বলে জানানো হয়েছে।

এই নিষেধাজ্ঞার ফলে প্রতিষ্ঠানগুলোর যুক্তরাষ্ট্রে থাকা সম্পদ জব্দ করা হবে এবং মার্কিন নাগরিক ও কোম্পানিরা তাদের সঙ্গে কোনো ধরনের লেনদেন করতে পারবে না। যেসব সহযোগী প্রতিষ্ঠানের ৫০ শতাংশের বেশি মালিকানা নিষিদ্ধ কোম্পানিগুলোর হাতে, সেগুলোও নিষিদ্ধের আওতায় আসবে।

যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে, এই পদক্ষেপ তাদের ‘সর্বোচ্চ চাপ প্রয়োগ’ নীতির অংশ। এর উদ্দেশ্য হলো ইরানের ‘ছায়া নৌবহর’ ও বিশ্বব্যাপী মধ্যস্বত্বভোগীদের নিয়ন্ত্রণ করা, যারা ইরানি তেল পরিবহনে ভূমিকা রাখছে। মার্কিন কর্মকর্তারা দাবি করছেন, এসব পণ্য রপ্তানির রাজস্ব ইরান মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিরতা ছড়ানো এবং সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোকে অর্থায়নে ব্যবহার করে।

ভারত ঐতিহাসিকভাবে ইরানের সঙ্গে বাণিজ্যিকভাবে ঘনিষ্ঠ হলেও ২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের আগের নিষেধাজ্ঞার পর ইরানি তেল আমদানি কমিয়ে দেয়। তবে সাম্প্রতিক সময়ে আবার কিছু প্রতিষ্ঠান ইরানের সঙ্গে লেনদেনে জড়িয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রতিষ্ঠানগুলো চাইলে ‘স্পেশালি ডেজিগনেটেড ন্যাশনালস’ (এসডিএন) তালিকা থেকে নিজেদের নাম বাদ দেওয়ার আবেদন করতে পারবে।

এদিকে, শুধু নিষেধাজ্ঞা নয়—যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ও রিপাবলিকান নেতা ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতের আমদানি পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ পাল্টা শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি বলেন, রাশিয়া থেকে অস্ত্র ও জ্বালানি কেনায় ভারতকে দণ্ড দেওয়া হবে। এই নতুন শুল্কনীতি ১ আগস্ট থেকে কার্যকর হবে বলে জানানো হয়েছে।