ভারত ও পাকিস্তানের শেয়ারবাজারে চাঙাভাব: যুদ্ধবিরতি ও বৈশ্বিক বাণিজ্য খবরে সূচক ঊর্ধ্বমুখী

প্রতিবেদক: আজ সপ্তাহের প্রথম দিন, সোমবার, ভারতের শেয়ারবাজারে শক্তিশালী চাঙাভাব দেখা গেছে। একই সঙ্গে পাকিস্তানের শেয়ারবাজারেও সূচকের বড় ধরনের উত্থান হয়েছে। বিশ্লেষকেরা বলছেন, ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধবিরতি এবং যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে বাণিজ্য আলোচনায় ইতিবাচক অগ্রগতির খবরে বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরেছে, যার প্রভাব পড়েছে বাজারে।

ভারতের স্থানীয় সময় দুপুর ১২টা পর্যন্ত প্রধান শেয়ারবাজার সূচক সেনসেক্স ২,৩৭৬ পয়েন্ট বা ২.৮৮ শতাংশ বেড়ে ৮১,৮৩০ পয়েন্টে পৌঁছেছে, যা ৮০ হাজারের ঘর ছাড়িয়ে যাওয়ার পর নতুন উচ্চতা। অপরদিকে, নিফটি সূচক ৭০৫ পয়েন্ট বা ২.৯৪ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৪,৭১৩ পয়েন্টে।

আজকের উত্থানের ফলে বোম্বে স্টক এক্সচেঞ্জে (BSE) নিবন্ধিত কোম্পানিগুলোর সম্মিলিত বাজার মূলধন বেড়েছে ১১.১ লাখ কোটি রুপি, যা বর্তমানে দাঁড়িয়েছে ৪২৭.৪৯ লাখ কোটি রুপিতে।

গত সপ্তাহে ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনার জেরে বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার টানা দুই দিন ভারতের শেয়ারবাজারে পতন দেখা গিয়েছিল। গত শুক্রবার সেনসেক্স ও নিফটি সূচক উভয়ই প্রায় ১ শতাংশ হারে কমে যায়, যার ফলে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়। মাত্র দুই দিনে বাজার মূলধন কমে যায় প্রায় ৭ লাখ কোটি রুপি।

তবে বিশ্লেষকেরা বলছেন, যুদ্ধবিরতির পর যদি নতুন করে কোনো সংঘাত সৃষ্টি না হয়, তাহলে আগামী দুই-তিন দিনের মধ্যেই বিনিয়োগকারীরা এই ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারবেন।

ভারত-পাকিস্তান সামরিক উত্তেজনার সময়ে বাজারে ওঠানামা নতুন নয়। যেমন-১৯৯৯ সালের কারগিল যুদ্ধ ৩ মে থেকে ২৬ জুলাই পর্যন্ত সেনসেক্স ও নিফটির পতন হয়েছিল শূন্য দশমিক ৮ শতাংশ।২০০১ সালের সংসদ ভবনে হামলা সেনসেক্স ও নিফটির পতন যথাক্রমে ০.৭ ও ০.৮ শতাংশ।২০০৮ সালের মুম্বাই হামলা হামলার দুই দিন পর সেনসেক্স ৪০০ এবং নিফটি ১০০ পয়েন্ট বেড়েছিল।

পাকিস্তানের শেয়ারবাজারেও আজ শক্তিশালী উত্থান দেখা গেছে। করাচি স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান সূচক কেএসই-১০০ ইনডেক্স ৯ শতাংশের বেশি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১,১৭,১০৪ পয়েন্টে। গত সপ্তাহে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ উত্তেজনার জেরে সূচকটি ৬,৯৩৯ পয়েন্ট বা ৬.১ শতাংশ কমে গিয়ে ১,০৭,০০০ পয়েন্টে নেমে গিয়েছিল।

সাম্প্রতিক ইতিবাচক কূটনৈতিক ও বৈশ্বিক অর্থনৈতিক খবর শেয়ারবাজারে আস্থা ফিরিয়েছে, যার প্রভাব বাজারের গতিপথে স্পষ্টভাবে প্রতিফলিত হচ্ছে।

এ ধরনের পরিস্থিতিতে বিনিয়োগকারীদের জন্য বাজার পর্যবেক্ষণে ধৈর্য ও দীর্ঘমেয়াদি দৃষ্টিভঙ্গি রাখার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশ্লেষকেরা।