
প্রতিবেদক: ভারতের রাজস্ব বিভাগ পেঁয়াজ রপ্তানি থেকে শুল্ক তুলে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। আগামী ১ এপ্রিল থেকে দেশটির রপ্তানিকারকেরা বিনা শুল্কে পেঁয়াজ রপ্তানি করতে পারবেন। এত দিন পেঁয়াজ রপ্তানিতে ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপিত ছিল।
শনিবার ভারতের অর্থ মন্ত্রণালয়ের রাজস্ব বিভাগ এ–সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করে। ভারতের অর্থ মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে এই তথ্য প্রকাশিত হয়েছে। মূলত দেশটিতে পেঁয়াজের মজুত বাড়ার কারণে শুল্ক প্রত্যাহারের এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
ভারতের এই সিদ্ধান্ত এমন সময় এলো, যখন বাংলাদেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম তুলনামূলকভাবে কম। অতীতে দেখা গেছে, ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানির ফলে স্থানীয় বাজারে দাম আরও কমে যায়, যার প্রভাব পড়ে কৃষকদের ওপর।
ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্যমতে, আজ রাজধানীর বাজারে দেশি পেঁয়াজের দাম কেজিপ্রতি ৩৫ থেকে ৫০ টাকা। এক বছর আগে এই দিনে দাম ছিল ৬০ থেকে ৭০ টাকা। বর্তমানে দেশে পর্যাপ্ত দেশি পেঁয়াজের মজুত রয়েছে, তবে আমদানি করা পেঁয়াজের সরবরাহ তেমন নেই।
২০২৩ সালের ডিসেম্বরে ভারত অভ্যন্তরীণ বাজারে সরবরাহ নিশ্চিত করতে পেঁয়াজ রপ্তানি নিষিদ্ধ করেছিল। ৮ ডিসেম্বর থেকে ২০২৪ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। এরপর, বিশ্ববাজারে পেঁয়াজের দাম বাড়তে থাকলেও ভারতীয় কৃষকেরা রপ্তানির সুযোগ পাচ্ছিলেন না, যা কৃষকদের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি করে।
লোকসভা নির্বাচন সামনে রেখে কৃষকদের দাবির মুখে ২০২৪ সালের ৪ মে ভারত আবার পেঁয়াজ রপ্তানির অনুমতি দেয়। তবে সে সময় ৪০ শতাংশ রপ্তানি শুল্ক এবং প্রতি টনের ন্যূনতম মূল্য ৫৫০ ডলার নির্ধারণ করা হয়। পরে, ১৩ সেপ্টেম্বর ভারত সরকার ন্যূনতম রপ্তানি মূল্য তুলে নিয়ে শুল্ক কমিয়ে ২০ শতাংশ করে। এবার সেই ২০ শতাংশ শুল্কও প্রত্যাহার করা হলো।
এর আগেও ভারত অভ্যন্তরীণ বাজার স্থিতিশীল রাখতে পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল, যা বাংলাদেশের বাজারেও প্রভাব ফেলেছিল। তবে বিশেষ বিবেচনায় বাংলাদেশসহ কয়েকটি দেশে পেঁয়াজ রপ্তানির অনুমতি দিয়েছিল ভারত।
এবার বিনা শুল্কে রপ্তানির সিদ্ধান্তের ফলে বাংলাদেশের বাজারে ভারতীয় পেঁয়াজের প্রবাহ বাড়তে পারে, যা স্থানীয় বাজারে দামের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।