
প্রতিবেদক: দেশে সয়াবিন ও পাম তেলের দাম বেড়েছে কি না, তা নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। এ বিষয়টি স্পষ্ট করতে আজ বৃহস্পতিবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোকে নিয়ে বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। বৈঠকে দাম বাড়ানোর বিষয়টি এবং বাড়লেও কতটুকু বাড়বে, তা চূড়ান্ত হতে পারে বলে মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে।
গত সোমবার ভোজ্যতেল পরিশোধন ও উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলোর সংগঠন বাংলাদেশ ভেজিটেবল ওয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন এক বিজ্ঞপ্তি দিয়ে সয়াবিন ও পাম তেলের দাম বাড়ানোর ঘোষণা দেয়। এতে বাজারে বিভ্রান্তি তৈরি হয়। তবে সরকার ওই ঘোষণা গ্রহণ করেনি। মঙ্গলবার বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন জানান, সরকার ভোজ্যতেলের দাম বাড়ায়নি।
বিষয়টি জানতে চাইলে গতকাল বুধবার বাণিজ্যসচিব মাহবুবুর রহমান বলেন, সংগঠনটি ঘোষিত নতুন দাম কার্যকর করেনি। সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য (এমআরপি) এখনো আগের মতোই আছে। নতুন এমআরপি নির্ধারণের কোনো সুযোগ নেই। কারখানামালিকেরা জানিয়েছেন, খুচরা পর্যায়ে দাম বাড়েনি।
বর্তমানে প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ১৮৯ টাকা। বিজ্ঞপ্তিতে এটি ১৯৫ টাকায় নির্ধারণের কথা বলা হয়েছে। খোলা সয়াবিন তেলের দাম ১৬৯ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৭৭ টাকা করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। খোলা পাম তেলের দাম ১৫০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৬৩ টাকা করার কথাও বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ রয়েছে।
জানা গেছে, কয়েক মাস ধরেই ভোজ্যতেলের দাম বাড়ানোর চেষ্টা করছেন পরিশোধনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মালিকেরা। গত ২২ সেপ্টেম্বর বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের সভাপতিত্বে এ বিষয়ে বৈঠক হয়। বৈঠক শেষে জানানো হয়, প্রস্তাবিত মূল্য আন্তর্জাতিক বাজারমূল্যের তুলনায় অনেক বেশি।
সাধারণত বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন (বিটিটিসি) নিত্যপণ্যের দাম নিয়ে পর্যালোচনামূলক প্রতিবেদন দেয়। গত মাসে তারা ভোজ্যতেল নিয়ে প্রতিবেদন দিয়েছে। তবে এবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয় অতিরিক্তভাবে দায়িত্ব দিয়েছে দ্য ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউনট্যান্টস অব বাংলাদেশ (আইসিএবি) এবং দ্য ইনস্টিটিউট অব কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউনট্যান্টস অব বাংলাদেশকে (আইসিএমএবি)।
আইসিএমএবির প্রেসিডেন্ট মাহতাবউদ্দিন আহমেদ জানান, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অনুরোধে তারা এ কাজ করছেন।
এর আগে চলতি বছরের এপ্রিল মাসে সয়াবিন তেলের দাম বাড়ানো হয়েছিল। তখন বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ১৪ টাকা বাড়িয়ে ১৮৯ টাকা করা হয়। খোলা সয়াবিন ও পাম তেলের দাম বাড়ানো হয় ১২ টাকা করে। পাঁচ লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ৭০ টাকা বাড়িয়ে ৯২০ টাকা করা হয়।
তবে আগস্টের মাঝামাঝি সময়ে খোলা পাম তেলের দাম লিটারে ১৯ টাকা কমিয়ে ১৫০ টাকা করা হয়। তখন ব্যবসায়ীরা সয়াবিন তেলের দাম ১০ টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছিলেন। জবাবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বলেছিল, সর্বোচ্চ ১ টাকা পর্যন্ত বাড়ানো যেতে পারে।
কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, বিটিটিসির মাধ্যমে নিত্যপণ্যের দাম পর্যালোচনার নির্ধারিত নিয়ম থাকা সত্ত্বেও তা অনুসরণ করা হয়নি বলেই বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। এর ফলে ভোক্তারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। ক্যাব এ ঘটনার প্রতিবাদ জানায়।