
প্রতিবেদন: কক্সবাজারের মাতারবাড়ী বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য আমদানি করা কয়লার চালানে বিপুল পরিমাণে মাটি পাওয়ায় চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে পাঠানো হয়েছে ভারতীয় কোম্পানির পাঠানো ৬৩ হাজার টন কয়লার জাহাজটি। কয়লা গ্রহণ করা হবে নাকি ফেরত পাঠানো হবে, এ বিষয়ে আজ রবিবার (তারিখ) মন্ত্রণালয়ে বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।
টেন্ডারের মাধ্যমে ইন্দোনেশিয়া থেকে কয়লা সংগ্রহের দায়িত্ব পাওয়া একটি ভারতীয় প্রতিষ্ঠান এই চালান পাঠায়। কিন্তু কয়লা খালাসের সময় মিশ্রিত বিপুল পরিমাণ মাটি ধরা পড়ে। এতে কয়লা বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য ব্যবহারোপযোগী নয় বলে সিদ্ধান্ত নেয় কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি লিমিটেড (সিপিজিসিএল)।
সিপিজিসিএল সূত্রে জানা গেছে, গত ১৭ মার্চ ‘এমভি ওরিয়েন্ট অর্কিড’ নামের সিঙ্গাপুরের পতাকাবাহী জাহাজটি মাতারবাড়ী বন্দরের চ্যানেলে প্রবেশ করে। কিন্তু কয়লা খালাসের সময় মাটির পরিমাণ বেশি থাকায় খালাসের জন্য ব্যবহৃত কনভেয়র বেল্ট বারবার বিকল হয়ে যাচ্ছিল। পরে বিদ্যুৎকেন্দ্রের কর্মকর্তারা জাহাজ থেকে কয়লা খালাস বন্ধ করে দিয়ে সেটিকে চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেন।
মাতারবাড়ী বিদ্যুৎকেন্দ্রের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মোহাম্মদ মনোয়ার হোসেন বলেন,টেন্ডারের মাধ্যমে ইন্দোনেশিয়া থেকে কয়লা সংগ্রহের দায়িত্বপ্রাপ্ত ভারতীয় প্রতিষ্ঠান নিম্নমানের কয়লা সরবরাহ করেছে, যেখানে মাটির পরিমাণ অত্যধিক। ফলে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য এটি ব্যবহার করা সম্ভব নয়।
নির্বাহী পরিচালক নাজমুল হক জানান, ৬৩ হাজার টন কয়লার মধ্যে ২২,৩৫০ টন আনলোড করা হয়। একপর্যায়ে সমস্যা দেখা দিলে ৪০,৬৫০ টন কয়লাসহ জাহাজটিকে বহির্নোঙরে পাঠানো হয়। আমরা এই চালান গ্রহণে অস্বীকৃতি জানিয়েছি এবং সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানকে অফিশিয়াল চিঠি দেওয়া হয়েছে।”
চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব মো. ওমর ফারুক বলেন, বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে আবেদন এসেছে, কয়লায় মাটির পরিমাণ বেশি। বিষয়টি কাস্টমস বিভাগ দেখবে, পাশাপাশি মন্ত্রণালয়ে বৈঠক হবে, যার সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”
বঙ্গোপসাগরের তীরে ১,৬০০ একর জমিজুড়ে তৈরি এই আল্ট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল কয়লাচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন ক্ষমতা ১,২০০ মেগাওয়াট। এর প্রথম ইউনিট ২০২২ সালের ডিসেম্বরে এবং দ্বিতীয় ইউনিট ২০২৩ সালের আগস্টে বাণিজ্যিক উৎপাদনে আসে।
সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান জাহাজ খালাসে দেনদরবার শুরু করলেও বিদ্যুৎকেন্দ্র কর্তৃপক্ষ অনিয়ম মেনে নিতে রাজি নয়। আজকের বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, চালানটি গ্রহণ নাকি ফেরত পাঠানো হবে তা চূড়ান্ত হবে।