মার্কিন শুল্কে বছরে এক বিলিয়ন ডলার হারাচ্ছে বাংলাদেশ: সিপিডি

প্রতিবেদক: বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যের ওপর আরোপিত শুল্ক থেকে যুক্তরাষ্ট্র প্রতি বছর এক বিলিয়ন ডলারের বেশি রাজস্ব আয় করছে। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানিকৃত পণ্যের ওপর বাংলাদেশ বছরে মাত্র ১৮০ মিলিয়ন ডলারের মতো শুল্ক আদায় করে।

এই বৈষম্যের চিত্র তুলে ধরে আজ বৃহস্পতিবার ঢাকার লেকশোর হোটেলে আয়োজিত এক সংলাপে বিশ্লেষণ প্রকাশ করেছে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)।

ট্রাম্প রেসিপ্রোকাল ট্যারিফ অ্যান্ড বাংলাদেশ: ইমপ্লিকেশনস অ্যান্ড রেসপন্স’ শীর্ষক সংলাপে সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, শুধু পোশাক আমদানিতেই যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশ থেকে বছরে এক বিলিয়ন ডলারের বেশি শুল্ক আয় করে থাকে।

সিপিডি জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের ওপর বাংলাদেশ গড়ে ৬.২ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে, যদিও বিভিন্ন রেয়াত বিবেচনায় গড় হার নেমে আসে ২.২ শতাংশে। বিপরীতে বাংলাদেশি পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের গড় শুল্ক ১৫.১ শতাংশ—যা বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রপ্তানি প্রতিযোগিতায় বিশেষ করে ভিয়েতনামের মতো দেশের সঙ্গে পাল্লা দিতে হলে যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চ শুল্কনীতির প্রভাব নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করা জরুরি।

সিপিডির পক্ষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহযোগিতা ফোরাম (টিকফা) চুক্তির কার্যকর ব্যবহার এবং কৌশলগত বিকল্প খোঁজার সুপারিশ করা হয়েছে।

বাংলাদেশ চাইলে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে কোন কোন পণ্যে তারা শুল্কমুক্ত সুবিধা চায়, তার একটি তালিকা আনুষ্ঠানিকভাবে অনুরোধ করতে পারে। তবে কিছু নির্দিষ্ট পণ্যে শুল্ক ছাড় দিলে, মোস্ট ফেভারড নেশন (MFN) নীতির আওতায় সেই সুবিধা অন্য বাণিজ্য অংশীদারদেরও দিতে হবে—যা একটি জটিলতা তৈরি করতে পারে।

এই সংকট নিরসনে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (FTA) করা যেতে পারে বলে মত দিয়েছে সিপিডি।

বাংলাদেশ চাইলে মার্কিন তুলা আমদানির জন্য বিশেষ ওয়্যারহাউজ সুবিধা দেওয়ার বিষয়টিও বিবেচনায় আনতে পারে, যা যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি পোশাকের ওপর শুল্ক ছাড় পাওয়ার আলোচনাকে আরও এগিয়ে নিতে পারে।