
প্রতিবেদক: শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত দেশের শীর্ষস্থানীয় ওষুধ কোম্পানি রেনাটা লিমিটেড চলতি ২০২৪–২৫ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে (জুলাই–মার্চ) উল্লেখযোগ্য হারে মুনাফা হারিয়েছে। এ সময়ে কোম্পানিটি মুনাফা করেছে ১৬৮ কোটি টাকা, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৯০ কোটি টাকা বা ৩৫ শতাংশ কম। ২০২৩–২৪ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে কোম্পানিটি মুনাফা করেছিল ২৫৮ কোটি টাকা। গতকাল বুধবার কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে তৃতীয় প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদন অনুমোদনের পর এই তথ্য প্রকাশ পায়।
তবে মুনাফা কমলেও এই সময়ে কোম্পানির ব্যবসা বা আয় বেড়েছে। আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, রেনাটা চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে মোট ৩,১৩৩ কোটি টাকার ব্যবসা করেছে, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৩৫২ কোটি টাকা বা প্রায় ১৩ শতাংশ বেশি। আগের বছর এই সময়ে কোম্পানির আয় ছিল ২,৭৮১ কোটি টাকা। কিন্তু আয় বাড়ার তুলনায় খরচ বেড়েছে আরও বেশি হারে, ফলে মুনাফায় চাপ পড়েছে।
প্রতিবেদনে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের ৯ মাসে উৎপাদন খরচ হয়েছে ১,৮১৭ কোটি টাকা, যা আগের বছরের তুলনায় ৩১৪ কোটি টাকা বা ২১ শতাংশ বেশি। পণ্য বিক্রি ও সরবরাহ খাতে খরচ বেড়েছে ১২৫ কোটি টাকা বা ১৮ শতাংশ; এই খাতে ব্যয় দাঁড়িয়েছে ৮৩৪ কোটি টাকা। পাশাপাশি ঋণের সুদ বাবদ খরচও বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২৫ কোটি টাকায়, যা আগের বছরের তুলনায় ৪৫ কোটি টাকা বা ৫৬ শতাংশ বেশি।
কোম্পানিসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, পণ্য বিক্রি, সরবরাহ ও ব্যাংকঋণের সুদ বাবদ খরচ উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বেড়ে যাওয়ায় রেনাটার মুনাফা কমেছে। তারা মনে করেন, উৎপাদন ও পরিচালন ব্যয় নিয়ন্ত্রণে না এলে মুনাফা আরও চাপের মুখে পড়তে পারে।
এছাড়া কোম্পানিটি চলতি বছরের প্রথম তিন মাসের (জানুয়ারি-মার্চ) আয়-ব্যয়ের হিসাবও আলাদাভাবে প্রকাশ করেছে। ওই সময়ে রেনাটা ১,০৬৫ কোটি টাকার ব্যবসা করে মুনাফা করেছে ৫৬ কোটি টাকা। আগের বছরের একই সময়ে ব্যবসা ছিল ৯২১ কোটি টাকা এবং মুনাফা ছিল ৭২ কোটি টাকা। অর্থাৎ তিন মাসে মুনাফা কমেছে ১৬ কোটি টাকা।
রেনাটা লিমিটেড ১৯৭৯ সালে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত হয়। বর্তমানে এটি ‘এ’ শ্রেণিভুক্ত এবং ভালো মৌলভিত্তির কোম্পানি হিসেবে বিবেচিত। সর্বশেষ ২০২৩ অর্থবছরে শেয়ারহোল্ডারদের জন্য কোম্পানিটি ৯২ শতাংশ লভ্যাংশ দিয়েছে, অর্থাৎ প্রতি শেয়ারে ৯ টাকা ২০ পয়সা। গতকাল বুধবার ডিএসইতে কোম্পানিটির শেয়ারের বাজারমূল্য ছিল ৪৯১ টাকা। চলতি বছরের ৯ মাসে করা মুনাফার ভিত্তিতে কোম্পানিটির পিই রেশিও দাঁড়িয়েছে ২৫। বাজার বিশ্লেষকদের মতে, পিই রেশিও যত কম, শেয়ার তত বেশি লাভজনক ও কম ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচিত হয়।