
প্রতিবেদক: বেসরকারি খাতের যমুনা ব্যাংক পরিবেশ, সমাজ ও অর্থনীতিকে সমান গুরুত্ব দিয়ে প্রতিটি কার্যক্রমে টেকসই উন্নয়নের নীতি অনুসরণ করছে। এর ধারাবাহিকতায় টানা তিনবার বাংলাদেশ ব্যাংকের টেকসই ব্যাংকের তালিকায় স্থান করে নিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। এই অর্জনের পেছনে রয়েছে পরিচালনা পর্ষদ ও ব্যবস্থাপনার দূরদর্শী নেতৃত্ব, সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা এবং সমন্বিত প্রচেষ্টা।
যমুনা ব্যাংকের প্রতিটি পদক্ষেপে পরিবেশ সুরক্ষা, সামাজিক কল্যাণ ও অর্থনৈতিক অন্তর্ভুক্তির প্রতিফলন রয়েছে। ব্যাংকটি বিনিয়োগ করছে বিদ্যুৎ–সাশ্রয়ী যন্ত্রপাতি স্থাপন, কৃষি খাত, ক্ষুদ্র ও মাঝারি প্রতিষ্ঠান, সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন, স্বয়ংক্রিয় ইট প্রস্তুতকরণ প্রকল্প, আধুনিক চাল উৎপাদন কারখানা এবং পুনর্ব্যবহারযোগ্য কাঁচামাল থেকে কাগজ উৎপাদনের মতো পরিবেশবান্ধব খাতে।
টেকসই অর্থায়নের লক্ষ্য পূরণে ব্যাংকটি কৃষি, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্প, কৃষি সরঞ্জাম উৎপাদন শিল্প, টেকসই ও পুনর্ব্যবহারযোগ্য পণ্যের ব্যবসা এবং দারিদ্র্য বিমোচন কর্মসূচিতে ঋণ বিতরণকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে। তবে পরিবেশবান্ধব প্রকল্প বাস্তবায়নে অতিরিক্ত ব্যয় ও গ্রাহকের অনীহা চ্যালেঞ্জ হিসেবে রয়ে গেছে।
যমুনা ব্যাংক ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে নিয়মিতভাবে বিভিন্ন সামাজিক উদ্যোগ বাস্তবায়ন করছে ব্যাংকটি। এর মধ্যে রয়েছে দরিদ্র ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের বৃত্তি প্রদান, শিক্ষাসামগ্রী বিতরণ, অবকাঠামো উন্নয়নে অনুদান, কম্পিউটার প্রশিক্ষণ, কোরআন শিক্ষা কার্যক্রম প্রভৃতি।
স্বাস্থ্য খাতে রয়েছে বিনা মূল্যে মেডিকেল ও চক্ষু চিকিৎসা ক্যাম্প, হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে অনুদান, ডায়ালাইসিস সেন্টার, ডায়াগনস্টিক কেন্দ্র, ডেন্টাল ক্লিনিক, চক্ষু হাসপাতাল এবং মাদক নিরাময়কেন্দ্র স্থাপন। এছাড়া বন্যা-ঘূর্ণিঝড়সহ প্রাকৃতিক দুর্যোগে ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যক্রম এবং প্রতিবছর দেশব্যাপী বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি আয়োজন করা হয়। এসব কার্যক্রমের জন্য ব্যাংকটি একাধিক আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছে।
সব শ্রেণির মানুষের আর্থিক অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করতে ব্যাংকটি নারী উদ্যোক্তাদের জন্য বিশেষ ঋণসুবিধা এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের জন্য সহজ শর্তে ঋণ প্রদান করছে। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কাছে ব্যাংকিং সুবিধা পৌঁছে দিতে গ্রামীণ এলাকায় শাখা সম্প্রসারণ, এজেন্ট ব্যাংকিং ও মোবাইল ব্যাংকিং চালু করেছে। একই সঙ্গে গ্রাহকসেবা উন্নত করতে ই-স্টেটমেন্ট, অ্যাপ–ভিত্তিক ব্যাংকিং, ইন্টারনেট ব্যাংকিং ও অনলাইন সেবা চালু করা হয়েছে।
প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরে সুশাসন, জবাবদিহি, নৈতিকতা ও দায়িত্ববোধ নিশ্চিত করতে যমুনা ব্যাংক বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে। জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট (এসডিজি) অনুসারে কার্যক্রম পরিচালনা, নিয়মিত ইএসজি প্রতিবেদন প্রকাশ এবং নীতিমালা হালনাগাদের মাধ্যমে ব্যাংকটি টেকসই উন্নয়নকে আরও বেশি অন্তর্ভুক্ত করেছে।