
প্রতিবেদক: সব জল্পনার অবসান ঘটিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ভারতকে ৫০ শতাংশ শুল্ক চাপিয়েছে। বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশ ও চতুর্থ বৃহৎ অর্থনীতি থেকে তৃতীয় বৃহৎ অর্থনীতিতে উন্নীত হওয়া পথে থাকা ভারতকে এই সময় হোয়াইট হাউস থেকে কঠোর সতর্কতা দেওয়া হলো। দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশের ওপর বিশ্বের সর্বোচ্চ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘোষণার পর ভারতীয় পণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আজ বুধবার থেকে কার্যকর হয়েছে। এর ফলে বিশ্বের দুই বৃহৎ গণতান্ত্রিক ও কৌশলগত অংশীদারের মধ্যে উত্তেজনা বাড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। ভারতের পাশাপাশি চীন ও ব্রাজিলের ওপরও শাস্তিমূলক ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতের তৈরি পোশাক, অলঙ্কার, জুতা, ফার্নিচার, স্পোর্টস আইটেম ও কেমিক্যাল পণ্যের ওপর নতুন শুল্ক আরোপের কারণে দাম বৃদ্ধি পাবে। বিশেষত ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের ফলে রাশিয়া থেকে তেল কেনার জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও মিত্ররা ভারতকে ২৫ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করেছে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, নতুন শুল্কের ফলে ভারত যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য রপ্তানিতে প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে তীব্র প্রতিযোগিতায় পড়বে। যেখানে কম শুল্ক আরোপ করা হয়েছে, সেই দেশগুলো ভারতের তুলনায় কম দামে পণ্য বিক্রি করতে পারবে। বিশেষভাবে গুজরাট রাজ্যের ছোট ও মাঝারি শিল্পকারখানাগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে, যা চাকরি হ্রাসের সম্ভাবনাও তৈরি করছে। উল্লেখ্য, এই রাজ্য থেকেই ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির রাজনৈতিক উত্থান ঘটেছে।
রয়টার্স জানিয়েছে, ভারতীয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এখনও আনুষ্ঠানিক মন্তব্য দেয়নি। তবে একজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ক্ষতিগ্রস্ত রপ্তানিকারকদের আর্থিক সহায়তা দেওয়ার ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া ভারত চীন, লাতিন আমেরিকা ও মধ্যপ্রাচ্যে রপ্তানি বাড়ানোর চেষ্টা করবে।
২০২৪-২৫ অর্থবছরে ভারতের যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি ছিল ৮৬.৫ বিলিয়ন ডলার। এর মধ্যে ৪৭ বিলিয়ন ডলারের পণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। ইউএস সেনসাস ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে ভারতের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের মোট বাণিজ্য ১২৯ বিলিয়ন ডলার ছিল এবং বাণিজ্য ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৪৫.৮ বিলিয়ন ডলার।