যুক্তরাষ্ট্র-ভারত বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আশাবাদী গোয়েল, আলোচনায় অগ্রগতি

প্রতিবেদক: ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে ‘দারুণ অগ্রগতি’ হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল। বৃহস্পতিবার লন্ডনে যুক্তরাজ্যের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তিতে সইয়ের পর এক সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন। একাধিক সময়সীমা পেরিয়ে গেলেও এবার তিনি যথেষ্ট আশাবাদী বলে জানান।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের হুঁশিয়ারি অনুযায়ী, ১ আগস্টের মধ্যে চুক্তি না হলে ভারতের পণ্যের ওপর উচ্চ শুল্ক আরোপ করা হবে। গত ২ এপ্রিল ট্রাম্প ভারতের পণ্যের ওপর ২৬ শতাংশ শুল্কের ঘোষণা দেন, যা পরবর্তী সময়ে সাময়িক স্থগিত করে ৯ জুলাই পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয় এবং পরে তা আবার ১ আগস্ট পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়।

এই প্রেক্ষাপটে, ভারতীয় প্রতিনিধি দল একাধিকবার যুক্তরাষ্ট্র সফর করলেও কৃষিপণ্যের প্রবেশাধিকারসহ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে অগ্রগতি না হওয়ায় চুক্তি চূড়ান্ত হয়নি। যদিও ট্রাম্প জানিয়েছেন, তারা অন্তর্বর্তীকালীন একটি চুক্তির খুব কাছাকাছি পৌঁছে গেছেন এবং পূর্ণাঙ্গ দ্বিপক্ষীয় চুক্তিতে পৌঁছানোর জন্য উভয় দেশ কাজ করছে।

গোয়েল রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা ভালোভাবেই এগোচ্ছে এবং ফলপ্রসূ অংশীদারিত্ব গড়ে উঠবে বলে তিনি আশাবাদী। কৃষি ও দুগ্ধজাত পণ্যে যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক ছাড় চাওয়া নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “আলোচনার বিষয় আলোচনা কক্ষেই থাক।” তবে তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন, ছোট ছোট খাতভিত্তিক সমঝোতা সম্ভব হলে পূর্ণাঙ্গ চুক্তির পথ খুলে যেতে পারে।

ব্লুমবার্গকেও গোয়েল জানিয়েছেন, তিনি বিশ্বাস করেন শেষ সময়সীমার আগেই চুক্তি সই হবে। তবে দীর্ঘদিন ধরে আলোচিত বিতর্কিত বিষয়গুলোর সমাধান কীভাবে হবে, তা এখনও পরিষ্কার নয়।

উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্র বহুদিন ধরে ভারতের কৃষি খাতকে আরও উন্মুক্ত করার দাবি জানিয়ে আসছে। কিন্তু ভারত খাদ্যনিরাপত্তা ও কৃষকের জীবিকা রক্ষার স্বার্থে এই খাতকে সুরক্ষিত রাখতে চায়। দুই দেশ পরস্পরের গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য অংশীদার—যেখানে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের পরিমাণ ১৯০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এ অঙ্ক ৫০০ বিলিয়ন ডলারে নিতে চান।

ভারত ইতিমধ্যেই বার্বন হুইস্কি ও মোটরসাইকেলের মতো কিছু পণ্যে শুল্ক হ্রাস করেছে। তবুও দেশটির সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫ বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্যঘাটতি রয়ে গেছে, যা কমাতে ট্রাম্প প্রশাসন কঠোর অবস্থান নিয়েছে।