রমজান মাসে মধ্যপ্রাচ্যে খাদ্যপণ্যের ৭৫% মূল্যছাড়

অনলাইন ডেক্স: পবিত্র রমজান মাস আত্মশুদ্ধির পথ দেখানোর পাশাপাশি মুসলমানদের জন্য একটি বিশেষ সময়। সারা বিশ্বের মুসলমানরা এই মাসটি নামাজ, রোজা ও জাকাত আদায়ের মাধ্যমে পালন করেন। মধ্যপ্রাচ্যসহ অন্যান্য মুসলিম দেশগুলোতে রমজান উপলক্ষে আবশ্যকীয় খাদ্যপণ্যের দামে বিশেষ ছাড় দেওয়া হয়। সরকার এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোও এই মাসে মূল্যছাড়ে পণ্য বিক্রি করে। সুপারমার্কেট, চেইনশপ ও ছোট দোকানগুলোতে চলছে মূল্যছাড়ের প্রতিযোগিতা।

কাতারে রমজান মাস আসলেই প্রতিবছর সরকারের পক্ষ থেকে আবশ্যকীয় পণ্যের দাম কমানোর ঘোষণা দেওয়া হয়। কাতারের বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয় এ বছর এক হাজারেরও বেশি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম কমানোর ঘোষণা দিয়েছে, যা রমজান শেষ হওয়া পর্যন্ত বিশেষ মূল্যছাড়ে বিক্রি হবে। ২০২৪ সালে ৯০০-এর বেশি পণ্যের দাম কমানো হয়েছিল এবং ২০২২ সালে ৮০০ পণ্যের দাম কমানো হয়েছিল।

এ বছর কাতারে চাল, ময়দা, নুডলস, দই, দুগ্ধজাত পণ্য, সিরিয়াল, গুঁড়া দুধ, রান্নার তেল, মাখন, পনির, চিনি, কফি, লবণ, খেজুর, ডিম, মাংস, টমেটোর পেস্ট, টিস্যু পেপার, ডিটারজেন্ট পাউডার সহ নানা প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম কমানো হয়েছে। অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানও ফ্রি খাবার বিতরণ করছে। কাতারের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ক্রেতাদের দায়িত্বশীলতার সঙ্গে কেনাকাটা করার আহ্বান জানিয়ে বলেছে, বিক্রেতারা নিয়মিতভাবে বিক্রি পর্যবেক্ষণ করছে এবং কোনো ধরনের নিয়মভঙ্গ হলে মন্ত্রণালয়ের অফিসিয়াল চ্যানেলে অভিযোগ জানাতে বলা হয়েছে।

সংযুক্ত আরব আমিরাতে রমজান উপলক্ষে ৬৪৪টি সুপারমার্কেট ১০ হাজার পণ্যে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় ঘোষণা করেছে। দেশটির সবচেয়ে বড় সুপারশপ লুলু হাইপারমার্কেট ৫,৫০০ পণ্যে ৬৫ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় দিয়েছে। সরকারি উদ্যোগের ফলে বাজারে ভোগ্যপণ্যের দাম সহনীয় পর্যায়ে রাখা সম্ভব হয়েছে।

সৌদি আরবেও রমজান ও ঈদ উপলক্ষে ৯ ফেব্রুয়ারি থেকে ছাড় শুরু হয়েছে, যা ৩ এপ্রিল পর্যন্ত চলবে। স্টোরগুলোর পাশাপাশি অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলোতে খাদ্যপণ্যসহ সব ধরনের পণ্যে ৭৫ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় দেওয়া হচ্ছে। ক্যারিফোর রমজানের অত্যাবশ্যকীয় ২০০ খাদ্যপণ্যে ৬০ শতাংশ পর্যন্ত মূল্যছাড় দিয়েছে।

সৌদি আরবের বাসিন্দারা এ সময়ে নিজেদের পছন্দের পণ্যগুলো কিনে বছরের জন্য সংরক্ষণ করেন। যেমন, জেদ্দার বাসিন্দা রাওয়ান হাসান রমজানের জন্য খেজুর কিনে রাখেন। তার প্রিয় খেজুরগুলো হল আজওয়া এবং সুক্কারি। উম্মে আয়শা পানীয়গুলো কিনে রাখেন, যেগুলি তিনি পুরো বছরব্যাপী খেতে চান, যেমন ‘টাংগ’ পানীয়।

এভাবে, মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ রমজান মাসে খাদ্যপণ্যের দাম কমিয়ে জনগণের সুবিধা নিশ্চিত করছে, যাতে তারা সস্তায় প্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে পারেন এবং একে অপরকে সহযোগিতা করতে পারেন।