
প্রতিবেদক: রাজশাহীতে ট্রাভেল ব্যাগ, জুতা ও তৈরি পোশাক উৎপাদন সীমিত আকারে শুরু করেছে দেশের অন্যতম শিল্পগ্রুপ প্রাণ-আরএফএল। এর মধ্য দিয়ে রাজশাহী মহানগরীতে নতুনভাবে চালু হওয়া বরেন্দ্র রাজশাহী টেক্সটাইল লিমিটেড কারখানায় প্রায় ১২ হাজার মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হচ্ছে।
সোমবার (২৮ এপ্রিল) দুপুরে নগরীর একটি রেস্টুরেন্টে আয়োজিত ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের বিপণন পরিচালক কামরুজ্জামান কামাল এসব তথ্য জানান। তিনি বলেন, দীর্ঘ ২২ বছর ধরে বন্ধ থাকা রাজশাহী টেক্সটাইল মিল এবার নতুনভাবে ‘বরেন্দ্র রাজশাহী টেক্সটাইল লিমিটেড’ নামে পুনরায় যাত্রা শুরু করছে।
বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিল করপোরেশন (বিটিএমসি)-এর সঙ্গে প্রাইভেট-পাবলিক পার্টনারশিপের (পিপিপি) আওতায় মিলটি চালু করছে প্রাণ-আরএফএল। বর্তমানে কারখানায় পরীক্ষামূলকভাবে উৎপাদন কার্যক্রম শুরু হয়েছে এবং খুব শিগগিরই এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হবে।
প্রায় ২৬ একর আয়তনের এই কারখানাকে উত্তরবঙ্গের সবচেয়ে বড় পরিবেশবান্ধব শিল্পপ্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্য রয়েছে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের। এই শতভাগ রপ্তানিমুখী কারখানায় তৈরি হবে ব্যাগ, জুতা এবং বিভিন্ন তৈরি পোশাক। পাশাপাশি এখানে একটি আধুনিক কল সেন্টারও প্রতিষ্ঠা করা হবে।
এই প্রকল্পে প্রায় ৩৫০ কোটি টাকার বিনিয়োগ পরিকল্পনা রয়েছে, যা বাস্তবায়িত হবে দুই বছরের মধ্যে। এতে ১২ হাজার মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে। গত বছরের অক্টোবরে চুক্তি স্বাক্ষরের পর ডিসেম্বরেই কারখানার দায়িত্ব বুঝে নেয় প্রাণ-আরএফএল এবং তিন মাসের মাথায় পরীক্ষামূলক উৎপাদন শুরু হয়।
কামরুজ্জামান কামাল বলেন, দেশের উন্নয়নের জন্য ঢাকাকেন্দ্রিক চিন্তাধারা থেকে বেরিয়ে এসে উত্তরবঙ্গে এই বৃহৎ শিল্প প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। এর ফলে রাজশাহীর হাজারো মানুষ কর্মসংস্থানের সুযোগ পাবে এবং স্থানীয় অর্থনীতি শক্তিশালী হবে।
তিনি আরও জানান, কারখানাটি হবে একটি সাসটেইনেবল গ্রিন ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক, যেখানে থাকবে সোলার এনার্জি, গ্রিন জোন ও পানি পুনঃব্যবহারের ব্যবস্থা।
প্রাণ-আরএফএলের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান মাল্টি লাইন ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের নির্বাহী পরিচালক আনিসুর রহমান জানান, পরিত্যক্ত শেড মেরামত করে ইতিমধ্যে স্বল্প পরিসরে জুতা ও ব্যাগ উৎপাদন শুরু হয়েছে। এতে রাজশাহীর প্রায় এক হাজার মানুষ কাজের সুযোগ পেয়েছে এবং আরও এক হাজার নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে।
তিনি আরও বলেন, স্থানীয় কর্মীদের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য এখানে একটি স্কিলস ডেভেলপমেন্ট সেন্টার স্থাপন করা হবে। রাজশাহী অঞ্চলের শ্রমবাজারকে কাজে লাগিয়ে রাজধানীমুখী শ্রমিকপ্রবাহ কমানোই এ বিনিয়োগের অন্যতম উদ্দেশ্য।
বর্তমানে রাজশাহী অঞ্চলে প্রাণ-আরএফএলের বরেন্দ্র ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক ও প্রাণ অ্যাগ্রো লিমিটেড নামে আরও দুটি কারখানা রয়েছে, যেখানে এক হাজার ২০০ লোক কাজ করছেন।
অনুষ্ঠানে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (জনসংযোগ) তৌহিদুজ্জামান এবং বরেন্দ্র রাজশাহী টেক্সটাইল লিমিটেডের অ্যাসিস্ট্যান্ট জেনারেল ম্যানেজার শরীফ উদ্দিন আহমেদসহ প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।