রাশিয়ার তেল কিনে ইউক্রেন যুদ্ধে অর্থায়ন, ভারতের বিরুদ্ধে চাপ বাড়ালো হোয়াইট হাউস

প্রতিবেদক: হোয়াইট হাউসের বাণিজ্য উপদেষ্টা পিটার নাভারো অভিযোগ করেছেন, রাশিয়ার তেল কিনে ভারত ইউক্রেন যুদ্ধে অর্থায়ন করছে। তাঁর দাবি, এই কেনাবেচা এখনই বন্ধ করতে হবে। ওয়াশিংটনও চাপ দিচ্ছে, যেন নয়াদিল্লি রাশিয়া থেকে জ্বালানি আমদানি কমায়।

নাভারো ফিন্যান্সিয়াল টাইমসে লিখেছেন, ভারত রাশিয়ার তেলের বিতরণকেন্দ্রের মতো কাজ করছে। নিষিদ্ধ অপরিশোধিত তেলকে উচ্চমূল্যের রপ্তানি পণ্যে রূপ দিচ্ছে এবং এর মাধ্যমে মস্কোকে প্রয়োজনীয় ডলার জোগাচ্ছে। তাঁর মতে, ভারতের এ কর্মকাণ্ড পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার প্রচেষ্টাকে দুর্বল করছে।

চীনের পর ভারত রাশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম তেল ক্রেতা। ভারতের মোট জ্বালানির ৩০ শতাংশের বেশি আসে মস্কো থেকে। ফলে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার মধ্যেও রাশিয়া বড় আয়ের উৎস পাচ্ছে। চলতি আগস্টে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতীয় পণ্যে ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেন, এর আগে আরও ২৫ শতাংশ আরোপিত হয়েছিল। সব মিলিয়ে ভারতের পণ্যে ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ হয়েছে, যা দুই দেশের মধ্যে টানাপোড়েন তৈরি করেছে।

রাশিয়া দীর্ঘদিন ধরে ভারতের ঘনিষ্ঠ প্রতিরক্ষা অংশীদার। ইউক্রেন যুদ্ধ চলাকালে মোদি মস্কো গিয়ে পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। একই সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভারতের কৌশলগত ও বাণিজ্যিক সম্পর্কও রয়েছে। দুই দেশের বার্ষিক বাণিজ্য ১২৮ বিলিয়ন ডলার, যার ৪৫ বিলিয়ন ডলার মার্কিন উদ্বৃত্ত ট্রাম্প কমাতে চাইছেন।

নাভারো সতর্ক করেছেন, ভারত রাশিয়া ও চীনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হচ্ছে। তিনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত অংশীদার হতে চাইলে ভারতের উচিত সেই অনুযায়ী আচরণ করা। নয়তো সর্বাধুনিক মার্কিন সামরিক প্রযুক্তি সরবরাহ ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যুক্তি দিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র ও ইইউ এখনও রাশিয়া থেকে পণ্য আমদানি করছে, কিন্তু ভারতকে এককভাবে চাপ দেওয়া হচ্ছে। ২০২৪ সালে রাশিয়ার সঙ্গে ইইউর বাণিজ্য ৭৭.৯ বিলিয়ন ডলার, যেখানে রাশিয়ার সামরিক বাজেটের প্রায় ৭৫ শতাংশ ধরা হয়েছে। একই সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্য মাত্র ৫.২ বিলিয়ন ডলার।

এ পরিস্থিতিতে ভারত-মার্কিন বাণিজ্য আলোচনা স্থগিত হয়েছে। ২৫ আগস্ট ভারতে আসার কথা থাকা যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদল এখন আসছে না। ফলে আপাতত ভারতের জন্য স্বস্তির খবর নেই।