
প্রতিবেদক: শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত বস্ত্র খাতের কোম্পানি রিংশাইন টেক্সটাইলের প্রাইভেট প্লেসমেন্ট ও আইপিও জালিয়াতির ঘটনায় মূল হোতা আবদুল কাদের ফারুকসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে ব্যবস্থা নিতে দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) চিঠি দিচ্ছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। আজ সোমবার বিএসইসির এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
আবদুল কাদের ফারুক ছাড়াও জালিয়াতিতে জড়িত হিসেবে চিহ্নিত হয়েছেন রিংশাইন টেক্সটাইলের ৯ বিদেশি মালিক, ভারতীয় নাগরিক অশোক কুমার চিরিমার এবং কোম্পানির আইপিওতে স্বাক্ষরকারী কোম্পানি সচিব ও সিএফও। তাঁদের সবার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে দুদকে চিঠি দেওয়া হয়েছে এবং দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারির জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
আবদুল কাদের ফারুক শার্প ইন্ডাস্ট্রিজ (সাবেক আরএন স্পিনিং) ও ফার কেমিক্যালের প্রতিষ্ঠাতা। ২০১২ সালে আরএন স্পিনিংয়ের রাইট শেয়ার কেলেঙ্কারি প্রমাণিত হলেও তৎকালীন বিএসইসি তাঁর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
রিংশাইন টেক্সটাইলের আইপিও জালিয়াতির অংশ হিসেবে মিথ্যা আর্থিক প্রতিবেদনকে সঠিক বলে প্রত্যয়ন করায় এএফসি ক্যাপিটাল ও সিএপিএম অ্যাডভাইজরির দুই প্রধান নির্বাহীকে পাঁচ বছরের জন্য শেয়ারবাজার কার্যক্রম থেকে নিষিদ্ধ করেছে বিএসইসি। পাশাপাশি তাদের লাইসেন্স বাতিলের সিদ্ধান্তও হয়েছে।
২০১৫-১৬ থেকে ২০১৯-২০ পর্যন্ত মিথ্যা আর্থিক বিবরণীর জন্য চারটি নিরীক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ফাইন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং কাউন্সিলে (FRC) অভিযোগের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলো হলো আহমেদ অ্যান্ড আখতার, শিরাজ খান বসাক, মাহফেল হক ও এ টি এ খান।
প্রাইভেট প্লেসমেন্টের মাধ্যমে কোম্পানির মূলধন বৃদ্ধিতে ইস্যু ব্যবস্থাপকের দায়িত্বে থাকা রাষ্ট্রায়ত্ত আইসিবি ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্টের বিরুদ্ধে কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
২০২১ সালে বিএসইসির তদন্তে উঠে আসে, কোম্পানিটি ১৬১ কোটি টাকার শেয়ার ইস্যু করলেও এর বিপরীতে কোনো অর্থ জমা দেওয়া হয়নি। এমনকি তালিকাভুক্তির পর উদ্যোক্তাদের জন্য নির্ধারিত লকইন শর্ত ভেঙে তারা শেয়ার বিক্রি করে দেয়। তদন্তে আরও জানা গেছে, প্রাইভেট প্লেসমেন্টে ৩৩ জন বাংলাদেশি ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান কোনো বিনিয়োগ ছাড়াই শেয়ার নিয়েছেন।
মার্জিন ঋণের মাধ্যমে ২৯৬ কোটি টাকার মানি লন্ডারিং–সংক্রান্ত অনিয়মের অভিযোগে প্রাইম ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট, পিএফআই সিকিউরিটিজ এবং প্রাইম ফাইন্যান্স ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্টের তৎকালীন পরিচালকদের বিরুদ্ধেও দুদকে চিঠি পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএসইসি। তাঁদের দেশত্যাগেও নিষেধাজ্ঞা আরোপের পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।