রিজার্ভ পুনরুদ্ধারে আশাবাদী সরকার, লক্ষ্যমাত্রা ৩৪.৪ বিলিয়ন ডলার

In লিড নিউজ
May 28, 2025

প্রতিবেদক: অন্তর্বর্তী সরকার আশা করছে, রেমিট্যান্স, রপ্তানি আয় এবং উন্নয়ন সহযোগীদের বাজেট সহায়তায় ২০২৫-২৬ অর্থবছরের শেষে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩৪ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হবে। এ লক্ষ্যমাত্রা আগামী ২ জুন পেশ হতে যাওয়া প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেটে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের ২৪ মে পর্যন্ত দেশের মোট রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ২৫ দশমিক ৭০ বিলিয়ন ডলার। এক বছর আগের একই সময়ে এ পরিমাণ ছিল ২৪ দশমিক ১৬ বিলিয়ন ডলার। বর্তমানে বাংলাদেশ ব্যাংক দুটি পদ্ধতিতে রিজার্ভ হিসাব করছে, যার একটি হলো আইএমএফ প্রস্তাবিত বিপিএম সিক্স পদ্ধতি। এই পদ্ধতিতে বর্তমানে রিজার্ভের পরিমাণ ২০ দশমিক ৪৭ বিলিয়ন ডলার।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের বক্তব্য অনুযায়ী, ডলারের স্থিতিশীল বিনিময় হার, রেমিট্যান্স বৃদ্ধির ধারা ও উচ্চ সুদহার রিজার্ভ বৃদ্ধিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। একইসঙ্গে আইএমএফ, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) এবং বিশ্বব্যাংকসহ বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগীর কাছ থেকে জুনের মধ্যে প্রায় ৩ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার বৈদেশিক সহায়তা পাওয়া যাবে বলে সরকার আশা করছে। এটি দেশের রিজার্ভ শক্তিশালী করতে বড় ভূমিকা রাখবে।

সরকার আশা করছে, চলতি বছরের জুন নাগাদ রিজার্ভ ৩১ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছাবে। সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেন, অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের ধারা অব্যাহত থাকায় জুনের শেষ নাগাদ রিজার্ভ প্রায় ৩০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হতে পারে। তিনি আরও বলেন, ইতোমধ্যে কিছু অগ্রগতি হয়েছে এবং ভবিষ্যতে রিজার্ভ আরও বাড়বে। তার মতে, দীর্ঘমেয়াদে রিজার্ভের লক্ষ্য ধরা হয়েছে ৪০ বিলিয়ন ডলার, যদিও তা অর্জনে কিছুটা সময় লাগবে।

সরকারের বাজেট প্রস্তাবে বলা হয়েছে, আগামী অর্থবছরে রপ্তানি প্রবৃদ্ধি হবে ১০ শতাংশ, যা চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে ছিল ৯ শতাংশ। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে মার্চ পর্যন্ত রপ্তানি আয় বেড়েছে ৯ দশমিক ৫ শতাংশ।

এছাড়া ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য আমদানির প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৮ শতাংশ, যা চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে ছিল ৫ শতাংশ। রেমিট্যান্স প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৮ শতাংশ, যদিও চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে তা ছিল ২০ শতাংশ।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, চলতি অর্থবছরে রেকর্ড পরিমাণ রেমিট্যান্স এসেছে। এ ধারা অব্যাহত থাকবে ধরে নিয়েই আগামী অর্থবছরে রেমিট্যান্স বৃদ্ধির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। বেশি রেমিট্যান্স এলে ডলারের বিনিময় হার আরও স্থিতিশীল থাকবে বলে তারা মনে করছেন।

২০২৩ সালের জুলাই থেকে ২০২৪ সালের ১১ মে পর্যন্ত প্রবাসীরা দেশে পাঠিয়েছেন ২৫ দশমিক ৪৫ বিলিয়ন ডলার, যা আগের বছরের তুলনায় ২৮ শতাংশ বেশি। রেমিট্যান্স বৃদ্ধির পেছনে অন্যতম কারণ হলো—সরকারি ও বেসরকারি হারের মধ্যে ব্যবধান কমে যাওয়া, অর্থপাচার রোধে কঠোর ব্যবস্থা এবং প্রবাসীদের মধ্যে দেশপ্রেমের নতুন চেতনা।