
প্রতিবেদক: দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধির পেছনে আন্তর্জাতিক ঋণ সহায়তা, রপ্তানি আয় এবং রেমিট্যান্স প্রবাহ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ।
বুধবার সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আইএমএফ, বিশ্বব্যাংক এবং এডিবির বাজেট-সহায়তার পাশাপাশি রপ্তানি ও রেমিট্যান্সে ইতিবাচক ধারা থাকায় রিজার্ভ বেড়েছে।”
উল্লেখ্য, গত সোমবার আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) বাংলাদেশের জন্য চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তিতে মোট ১.৩৭ বিলিয়ন ডলার ঋণ অনুমোদন করেছে। একই সময় বিশ্বব্যাংক ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের সহায়তাও এসেছে।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, সৌদি আরবে গিয়ে শুনেছি, আমাদের অন্তর্বর্তী সরকার আসার পর সাধারণ মানুষ টাকা পাঠাচ্ছেন। আগে তাঁরা টাকা পাঠাতে অস্বস্তি বোধ করতেন— টাকাটা কোথায় যায়, কী হয়, তা নিয়ে সন্দেহ ছিল।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সালেহউদ্দিন বলেন, “অর্থনৈতিক সংস্কার অনেকটাই নির্ভর করে রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের ওপর। এখন মোটামুটি বোঝা যাচ্ছে নির্বাচন কবে হবে, এটা ব্যবসায়ীদের মধ্যে আস্থা বাড়াচ্ছে।”
বিনিময় হার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমরা যখন ডলারের বিনিময় হার বাজারের ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম, তখন ভয় ছিল— হঠাৎ পাকিস্তানের মতো পরিস্থিতি হবে না তো? কিন্তু তা হয়নি, বরং স্থিতিশীলভাবেই বাজার চলছে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চলমান আন্দোলন নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “এই আন্দোলনের পেছনে আগের সরকারের সুবিধাভোগী কিছু ব্যবসায়ীর ইন্ধন থাকতে পারে। সংস্কারের কারণে স্বচ্ছতা বাড়বে এবং কর্মকর্তাদের ক্যারিয়ার সম্ভাবনাও উন্নত হবে।”
তিনি আরও বলেন, “আগের সরকারের সময় কিছু ব্যবসায়ী এনবিআরের স্বচ্ছতার ঘাটতির সুবিধা নিয়েছে। তাই আজ যখন আমরা কাঠামোগত পরিবর্তন আনছি, তখন তারাই বাধা সৃষ্টি করছে।”
ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধ পরিস্থিতি সম্পর্কে তিনি জানান, হরমুজ প্রণালিতে চলমান উত্তেজনার মাঝেও আমাদের জ্বালানি কেনায় সাশ্রয় হয়েছে। দরপত্রের মাধ্যমে প্রতি ব্যারেলে ৫ থেকে ১০ ডলার কমে জ্বালানি কেনা গেছে, এতে ৭০ থেকে ৮০ কোটি টাকা সাশ্রয় হয়েছে, যা জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের সফলতা।
তিনি আরও বলেন, “সারের কিছু দাম বেড়েছে, বিশেষ করে মরক্কো ও তিউনিসিয়া থেকে আমদানিতে, কিন্তু সেটা বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে নিয়ন্ত্রণের বাইরে।
বৈঠকে গম আমদানি নিয়ে আলোচনার বিষয়ে অর্থ উপদেষ্টা জানান, “এবার গম কেনায় ১৮ থেকে ২০ কোটি টাকা সাশ্রয় হয়েছে। দেশে এখন পর্যন্ত চাল ও গমের রিজার্ভ সন্তোষজনক, তবে আমরা আগাম প্রস্তুতি হিসেবে ৫০ হাজার টন গম মজুত রাখার নির্দেশ দিয়েছি যেন খাদ্য সংকট না হয়।