রিটার্ন না দেখালে মিলবে না গ্যাস, বিদ্যুৎ, লাইসেন্সসহ নানা সেবা

প্রতিবেদক: চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছর থেকে দেশের ৩৯টি সরকারি ও বেসরকারি সেবা গ্রহণে বাধ্যতামূলকভাবে আয়কর বিবরণী বা রিটার্ন জমার প্রমাণপত্র দেখাতে হবে। এসব সেবার জন্য সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো তখনই সেবা দেবে, যখন সেবাগ্রহীতা রিটার্ন জমার যথাযথ প্রমাণ দেখাতে পারবেন। কেউ প্রমাণপত্র না দেখিয়ে সেবা পেয়ে গেলে সেই সেবাদাতা কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধেও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার বিধান রাখা হয়েছে। যদিও আগে থেকেই কিছু কিছু সেবায় রিটার্ন জমার প্রমাণপত্র আবশ্যক ছিল, এবার সেই তালিকা আরও বিস্তৃত হলো। এ বছর কিছু সেবা বাদ দেওয়া হলেও এখনো ৩৯টি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে এ নিয়ম বলবৎ থাকছে।

এ তালিকার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু সেবা হলো: ২০ লাখ টাকার বেশি ঋণ গ্রহণ, কোম্পানির পরিচালক বা শেয়ারহোল্ডার হওয়া, আমদানি-রপ্তানি নিবন্ধন সনদ গ্রহণ বা নবায়ন, সিটি করপোরেশন ও পৌরসভায় ট্রেড লাইসেন্স, জমি বা অ্যাপার্টমেন্ট কেনাবেচা ও নিবন্ধন, বিশেষজ্ঞ পেশাজীবীদের (যেমন চিকিৎসক, প্রকৌশলী, আইনজীবী) সদস্যপদ নবায়ন, বিবাহ নিবন্ধকের লাইসেন্স গ্রহণ ও নবায়ন, ট্রেড বডির সদস্যপদ গ্রহণ, ওষুধ ও পরিবেশ লাইসেন্স, গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংযোগ, ইটভাটা অনুমোদন, ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে ভর্তি, কোম্পানির এজেন্সি গ্রহণ, আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স, ১০ লাখ টাকার বেশি সঞ্চয়পত্র বা মেয়াদি আমানত, জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ, সরকারি ও বেসরকারি উচ্চ পদে চাকরি এবং বিভিন্ন ইলেকট্রনিক আর্থিক লেনদেনে অর্থ গ্রহণ।

এছাড়া, পণ্য সরবরাহ, দরপত্র জমা, বিল অব এন্ট্রি দাখিল, উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের কাছে ভবন নির্মাণের অনুমোদন, বাড়ি ভাড়া বা লিজ প্রদান, পণ্য বা সেবা সরবরাহ, হোটেল-রেস্টুরেন্টসহ বিভিন্ন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স গ্রহণ বা নবায়ন এবং সামাজিক বা করপোরেট অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য কমিউনিটি সেন্টার ভাড়া নেওয়ার ক্ষেত্রেও রিটার্ন জমার প্রমাণপত্র আবশ্যক।

এই উদ্যোগের মাধ্যমে আয়কর নেট সম্প্রসারণ ও রাজস্ব আহরণে স্বচ্ছতা আনার পাশাপাশি নাগরিকদের করসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্য নিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। তাই যেসব নাগরিক এসব সেবা নিতে চান, তাদের নিয়মিত আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়ার প্রস্তুতি এখন থেকেই নিতে হবে।