
প্রতিবেদক: বাজারে এখন দেশি গাবের মৌসুম চলছে। রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে এই ফল মিলছে ১০০ থেকে ১২০ টাকা কেজি দরে। দাম তুলনামূলকভাবে কম হওয়ায় এবং পুষ্টিগুণ ও স্বাদের কারণে ক্রেতাদের আগ্রহও বাড়ছে। একসময় গ্রামবাংলার পরিচিত হলেও জনপ্রিয়তা ছিল না গাবের, কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে শহুরে মানুষের কাছে এর কদর বাড়ছে।
গাব বা বিলাতি গাব আমাদের দেশীয় এক সুস্বাদু ও পুষ্টিকর ফল। আগে গাবকে সাধারণ ও কম গুরুত্বপূর্ণ ফল মনে করা হতো। গ্রামগঞ্জে প্রচুর গাবগাছ থাকলেও তেমন বাণিজ্যিক মূল্য ছিল না। তবে এখন রাজধানীর গলি-গলিতে ভ্যানে, এমনকি অভিজাত ফলের দোকানেও গাব বিক্রি হতে দেখা যায়। স্মৃতির টান, স্বাদের আলাদা অনুভূতি এবং পুষ্টি সচেতনতা—এই তিনে মিলেই গাবের প্রতি আগ্রহ বেড়েছে।
গাবের দুটি জাতের মধ্যে বিলাতি গাবের কদর তুলনামূলকভাবে বেশি। গাঢ় বেগুনি–লাল রঙের এই গাব ইউরোপে ‘বাটার ফ্রুট’ বা ‘ভেলভেট আপেল’ নামে পরিচিত। রাজধানীর কারওয়ান বাজার, ফার্মগেট, মোহাম্মদপুর, মিরপুর, পুরান ঢাকা ও উত্তরা এলাকার বাজারে বিলাতি গাব পাওয়া যাচ্ছে ১২০ থেকে ১৫০ টাকা কেজি দরে। খামারবাড়ি এলাকায় রাস্তায় বসে বিক্রেতারা বলছেন, এই গাব বরিশালের বিলাতি গাব নামে পরিচিত, যা শহরের শৌখিন ক্রেতাদের কাছে বেশ জনপ্রিয়।
দেখতে সাধারণ হলেও গাব পুষ্টিগুণে অনন্য। এতে রয়েছে প্রচুর অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট, যা সর্দি, জ্বর, কাশি থেকে শরীরকে রক্ষা করে। গাব ডায়াবেটিস, হৃদ্রোগ, ক্যানসার প্রতিরোধে সহায়ক। এটি শারীরিক দুর্বলতা কমায়, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, রক্ত চলাচল স্বাভাবিক করে, হজমে সহায়তা করে এবং ত্বকের প্রদাহ কমায়। এছাড়া গাব বুকে রক্ত জমাট বাঁধতে দেয় না ও অ্যাজমা দূর করতেও সহায়তা করে। গাবগাছের ছাল পেটের অসুখ ও আমাশয়ের জন্যও উপকারী। এসব উপকারিতার কারণেই গাবের প্রতি শহরের মানুষ আগ্রহী হয়ে উঠছেন।