
প্রতিবেদক: যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি পণ্যে আরোপিত ৩৫ শতাংশ শুল্ক কমাতে কৌশল হিসেবে দেশটি থেকে ২৫টি বোয়িং উড়োজাহাজ কেনার অর্ডার দিয়েছে বাংলাদেশ। রোববার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে রেসিপ্রোক্যাল ট্যারিফ বিষয়ে আলোচনায় সুবিধা পেতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সচিব জানান, বোয়িংয়ের ব্যবসা যুক্তরাষ্ট্র সরকার পরিচালনা না করলেও কূটনৈতিকভাবে এর প্রভাব পড়ে। ভারত ও ভিয়েতনাম যেখানে ১০০টি করে বোয়িং অর্ডার দিয়েছে, সেখানে বাংলাদেশ ২৫টি অর্ডার করেছে। এসব অর্ডার প্রাপ্তি নির্ভর করবে বোয়িং কোম্পানির সরবরাহ সক্ষমতা ও অগ্রাধিকার ভিত্তিতে। বর্তমানে বাংলাদেশ বিমানের বহর দ্রুত বাড়ানোর প্রয়োজন রয়েছে। আগে ১৪টি বোয়িং অর্ডার করা হয়েছিল, এবার সেই সংখ্যা ২৫-এ উন্নীত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, গত ২৩ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রকে বাংলাদেশের অবস্থান জানানো হয়েছে। ওয়াশিংটনে ইউএস ট্রেড রিপ্রেজেন্টেটিভ (ইউএসটিআর) অফিসে মঙ্গল ও বুধবার সরাসরি বৈঠক হবে। এতে বাণিজ্য উপদেষ্টা, নিরাপত্তা উপদেষ্টা এবং বাণিজ্য সচিব অংশ নেবেন। বৈঠকের ফলাফল ১ আগস্টের মধ্যে পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
সচিব আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র থেকে ইতিমধ্যে কিছুটা বেশি দামে ২ লাখ ২০ হাজার টন গম আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এছাড়া বেসরকারি খাত সয়াবিন তেল আমদানির চিন্তা করছে এবং তুলা আমদানির বিষয়েও অগ্রগতি হয়েছে। এসব পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সম্পর্ক জোরদার করতে সহায়ক হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বিনিয়োগচুক্তি বিষয়েও আলোচনা চলছে, তবে তা মূল উদ্দেশ্য নয় বলে জানান সচিব। যুক্তরাষ্ট্রের বিশাল বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে রেসিপ্রোক্যাল ট্যারিফ আরোপ করছে। বাংলাদেশও রাষ্ট্রীয় স্বার্থে বিকল্প আমদানির উৎস হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার ওপর নির্ভরশীলতা বাড়াচ্ছে।
তিনি বলেন, “আমাদের পতাকাবাহী বিমান সংস্থা এবং হ্যাঙ্গার বোয়িং নির্ভর। তাই বোয়িং কেনা ছাড়া উপায় নেই। তবে এর মানে এই নয় যে, আমরা এয়ারবাস বা অন্য বিমান কিনবো না। যুক্তরাষ্ট্র থেকে কেনাকাটা আমাদের বাজারে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে না।”
তিনি আশা প্রকাশ করেন, চীন থেকে উৎপাদন সরিয়ে আনার প্রবণতা বাড়লে বাংলাদেশও এর সুফল পেতে পারে। রপ্তানিকারক প্রতিযোগীদের তুলনায় যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের ওপর বাড়তি চাপ দেবে না বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।