
প্রতিবেদক: শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তির ১৩ বছর পর প্রিমিয়ার ব্যাংক এবার প্রথমবার শেয়ারধারীদের কোনো লভ্যাংশ না দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। পাশাপাশি চলতি বছরের প্রথমার্ধে (জানুয়ারি–জুন) ব্যাংকটি শতকোটি টাকার বেশি লোকসান করেছে। এই সিদ্ধান্ত ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের গতকাল বুধবারের সভায় আর্থিক প্রতিবেদন অনুমোদনের পর নেওয়া হয়। ব্যাংকটি আজ বৃহস্পতিবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)-এর মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের এ তথ্য জানিয়েছে।
ডিএসইতে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, প্রিমিয়ার ব্যাংকের পুনর্গঠিত পরিচালনা পর্ষদের সভায় গত বছরের আর্থিক প্রতিবেদন ও চলতি বছরের প্রথমার্ধের প্রতিবেদন পর্যালোচনা করা হয়। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, শেয়ারধারীদের কোনো লভ্যাংশ দেওয়া হবে না। যদিও ব্যাংকটি গত বছর ১৩৪ কোটি টাকা মুনাফা করেছে, ২০২৩ সালে মুনাফা ছিল প্রায় ৪১৬ কোটি টাকা, অর্থাৎ এক বছরে মুনাফা কমেছে ২৮২ কোটি টাকা বা ৬৮ শতাংশ।
প্রিমিয়ার ব্যাংক ২০০৭ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয় এবং বর্তমানে ভালো মৌলিক ভিত্তির ‘এ’ শ্রেণীভুক্ত কোম্পানি হিসেবে রয়েছে। তালিকাভুক্তির পর ব্যাংকটি প্রতি বছর শেয়ারধারীদের নগদ, বোনাস বা স্টক লভ্যাংশ দিয়ে আসছে। এর মধ্যে কয়েক বছর ব্যাংক উভয় ধরনের লভ্যাংশও দিয়েছে। সর্বশেষ ২০২৩ সালের জন্য ব্যাংকটি শেয়ারধারীদের সাড়ে ১২ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল।
১৯৯৯ সালে প্রতিষ্ঠিত ব্যাংকটি আওয়ামী লীগ নেতা এইচ বি এম ইকবাল ও তাঁর পরিবারের নিয়ন্ত্রণে ছিল। গত বছরের আগস্টে দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর ব্যাংকটির নেতৃত্বেও পরিবর্তন আসে। ১৯ আগস্ট বাংলাদেশ ব্যাংক পরিচালনা পর্ষদকে ইকবাল পরিবারমুক্ত করে নতুন পর্ষদ গঠন করে, যার মধ্যে একজন শেয়ারধারী পরিচালক ও পাঁচজন স্বতন্ত্র পরিচালক রয়েছেন। এই নতুন পর্ষদের সভায় গত বছরের বার্ষিক ও চলতি বছরের দুই প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদন অনুমোদন করা হয়।
ডিএসইর তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে ব্যাংকটি ১৩৭ কোটি টাকা লোকসান করেছে। এতে জুন মাস শেষে ব্যাংকের শেয়ারপ্রতি আয় (EPS) ঋণাত্মক ১ টাকা ১১ পয়সা হয়েছে। একই সময়ে গত বছর ব্যাংকটি ১৯৫ কোটি টাকা মুনাফা করেছিল।
লভ্যাংশ না দেওয়া ও চলতি বছরের লোকসানের খবরে আজ ঢাকার শেয়ারবাজারে প্রিমিয়ার ব্যাংকের শেয়ারের দাম ১০ পয়সা বা প্রায় ১.৫ শতাংশ কমে ৬ টাকা ৮০ পয়সায় দাঁড়িয়েছে। প্রথম দেড় ঘণ্টায় ব্যাংকের প্রায় সাড়ে পাঁচ লাখ শেয়ার লেনদেন হয়েছে, যার বাজারমূল্য ছিল ৩৬ লাখ টাকা।