
প্রতিবেদক: বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) একাংশের আন্দোলনের পেছনে শেয়ারবাজার কারসাজিকারীদের রক্ষা করার উদ্দেশ্য ছিল বলে মনে করছে কমিশন। চলতি মাসের শুরুর দিকের এই আন্দোলনের কারণে বিএসইসি দুই দিন অচল ছিল এবং শীর্ষ নেতৃত্বকে অবরুদ্ধ করা হয়।
গত ৫ মার্চ দুর্নীতির অভিযোগে বরখাস্ত হওয়া এক কর্মকর্তার পুনর্বহালের দাবিতে বিক্ষোভকারীরা বিএসইসি চেয়ারম্যান ও তিন কমিশনারকে বৈঠককক্ষে অবরুদ্ধ করে রাখেন। তারা বৈঠককক্ষে ঢুকে বিদ্যুৎ ও সিসিটিভি ক্যামেরা বন্ধ করে দেন এবং চার ঘণ্টা কমিশনকে জিম্মি করে রাখেন। এমনকি কর্মকর্তারা গালিগালাজ ও শারীরিক লাঞ্ছনার মতো ঘটনা ঘটান বলে তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সেনা সদস্যদের হস্তক্ষেপ করতে হয় এবং লাঠিচার্জের মাধ্যমে শীর্ষ নেতৃত্বকে উদ্ধার করা হয়।
বিএসইসি জানিয়েছে, গত সরকারের আমলে ঘটে যাওয়া দুর্নীতি ও অনিয়মের তদন্ত করতে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছিল। ওই কমিটির প্রতিবেদনে বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান, কমিশনার ও কর্মকর্তাসহ শেয়ার কারসাজিতে জড়িত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান চিহ্নিত হয়। এরপর জড়িতদের কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠানো হলে কিছু কর্মকর্তা এ নোটিশ প্রত্যাহারের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন।
তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আন্দোলনকারীরা শেয়ারবাজার লুটপাটে জড়িতদের রক্ষা করতে চেয়েছেন এবং অপরাধীদের জবাবদিহি থেকে আড়াল করার অপচেষ্টা চালিয়েছেন।
বিএসইসির প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদন ইতোমধ্যে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগে (এফআইডি) পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় শৃঙ্খলা ফেরাতে উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠনের অনুরোধ জানানো হয়েছে।
ভবিষ্যতে এমন পরিস্থিতি এড়াতে বিএসইসি প্রাঙ্গণে আনসারের মতো সশস্ত্র নিরাপত্তাকর্মী মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে, শৃঙ্খলা রক্ষায় সরকারি কর্মকর্তা নিয়োগ ও বিএসইসির কাঠামোগত সংস্কারে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সহযোগিতা চেয়েছে কমিশন।
এদিকে, বিএসইসি চেয়্যারম্যান ও কমিশনারদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য অতিরিক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।